free page hit counter

গবাদি পশু পালন একটি লাভজনক প্রক্রিয়া ও গরু মোটাতাজাকরণ ও আনুমানিক লাভ ক্ষতি ২০২২

গবাদি পশু পালন একটি লাভজনক প্রক্রিয়া

by Md Limon
গবাদি পশু পালন একটি লাভজনক প্রক্রিয়া
গবাদি পশু পালন একটি লাভজনক প্রক্রিয়া

গবাদি পশু পালন একটি লাভজনক প্রক্রিয়া

গ্রামাঞ্চল গবাদি পশু পালনের জন্য উপযুক্ত স্থান। আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ বাস করে গ্রামাঞ্চলে। জীবিকা নির্বাহের জন্য তারা কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। আর কৃষিকাজ নির্ভরশীল গবাদি পশুর উপর।

গবাদি পশু পালন একটি লাভজনক প্রক্রিয়া ও গরু মোটাতাজাকরণ ও আনুমানিক লাভ ক্ষতি

গবাদি পশু পালন একটি লাভজনক প্রক্রিয়া ও গরু মোটাতাজাকরণ ও আনুমানিক লাভ ক্ষতি

গবাদি পশু হিসেবে সাধারণত আমাদের দেশে গরু ছাগল মহিষ ভেড়া হাঁস-মুরগি ইত্যাদি পালন করা হয়। তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো গরু। গবাদিপশু পালনের অনেক উপকারিতা রয়েছে। গবাদি পশু পালন করলে আর্থিকভাবে খুবই লাভবান হওয়া যায়। ব্যাপারটি আমরা প্রথমে গরুর কথা দিয়ে বিবেচনা করি।
গরু আমাদের দুধ দেয়। গরু পালন করলে একজন ব্যক্তি প্রতিদিন তার দুধ পাবেন। সেই দুধ বাজারে বিক্রয় করে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। এমনকি তিনি দুধের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। একটি গরু প্রতিদিন দুইবার প্রচুর পরিমাণে দুধ দিতে পারে।

গরুর পাশাপাশি আমাদের দেশে মহিষের দুধ ও জনপ্রিয়। মহিষের দুধ অত্যন্ত ঘন এবং ক্ষীর এবং ঘি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। মহিষের দুধ খুবই সুস্বাদু। দুধ আমাদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। এটি একটি আদর্শ খাবার। শর্করা আমিষ স্নেহ ভিটামিন খনিজ লবণ এবং পানি সঠিক অনুপাতে দুধে বন্টিত থাকে। সুস্বাস্থ্যের একমাত্র পূর্বশর্ত হলো দুধ। যা আমরা গবাদি পশু থেকে পেয়ে থাকি।

এছাড়া হাঁস-মুরগী পালন করলে ডিম পাওয়া যায়। ডিম অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি খাবার। এটি আমাদের শরীরে ভিটামিন ও স্নেহ দ্রব্যের চাহিদা পূরণ করে। হাঁস ও মুরগি প্রতিমাসে নিয়মিত ডিম দিয়ে থাকে। ডিম বাজারে বিক্রয় করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া যায়। এছাড়া অনেকেই গবাদি পশু হিসেবে কবুতর পালন করে থাকেন , গবাদি পশু পালন একটি লাভজনক প্রক্রিয়া ।

এবার আসা যাক মাংসের কথায়। গরু ছাগল হাঁস মুরগি মহিষ ভেড়া ইত্যাদির মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু। বাজারে প্রচুর দামে বিক্রি হয় । একজন মানুষ গবাদি পশু পালন করে প্রচুর অর্থ আয় করতে পারে মাংস বিক্রয়ের মাধ্যমে। মাংস একটি অতি পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার। আমাদের শরীরকে সুস্থ সবল রাখতে এবং দেহের শক্তি বৃদ্ধিতে মাংস সাহায্য করে।

ভেড়ার লোম কম্বল তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ ভেড়ার লোম অনেক দামে বাজারে বিক্রয় হয়। গবাদিপশুর শরীরের কোন অংশ ই ফেলে দেওয়া হয় না। বরং বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। গরুর চামড়া ঢোল তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও গরু ছাগল ও মহিষের শিং নানারকম অস্ত্র তৈরিতে সাহায্য করে। অর্থাৎ গবাদি পশুর মাংস থেকে শুরু করে গায়ের লোম পর্যন্ত প্রতিটি উপাদান গুরুত্বপূর্ণ। গবাদি পশু পালন আমাদের অর্থনীতিকে করেছে সমৃদ্ধ এবং আমাদেরকে করেছে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী।

গবাদি পশু পালন একটি লাভজনক প্রক্রিয়া ও গরু মোটাতাজাকরণ ও আনুমানিক লাভ ক্ষতি

গবাদি পশু পালন একটি লাভজনক প্রক্রিয়া ও গরু মোটাতাজাকরণ ও আনুমানিক লাভ ক্ষতি

অনেক বেকার মানুষ নিজেকে সফল করতে সক্ষম হয়েছেন গবাদি পশু পালনের মাধ্যমে। গবাদি পশু পালনের মাধ্যমে যেমন পরিবারের পুষ্টি চাহিদা মেটানো যায় তেমনি,বাজারে বিক্রয় করার মাধ্যমে সারা দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদা মেটানো যায়। গবাদি পশু পালন গ্রামের মানুষের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি পেশা।গ্রামের অধিকাংশ মানুষ জীবিকার খোঁজ করে নিয়েছে গবাদি পশু পালনের মাধ্যমে। গ্রামের প্রায় এমন কোন লোককে খুঁজে পাওয়া যাবে না যিনি গরু ছাগল হাঁস মুরগি পালন করেন না।অর্থাৎ তাদের মধ্যেই এই কাজ খুবই জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। সেইসাথে গবাদিপশুর মমতায় জড়িয়ে গেছেন গ্রামের মানুষ। পশু-পাখিকে তারা অত্যন্ত যত্নের সাথে পরিবারের একজন বিবেচনা করে পালন করে। তাদের মধ্যে মায়া-মমতা অত্যন্ত বেশি এবং যত্ন নেয়ার প্রবণতা বেশি।

তাই গবাদিপশু আমাদের অর্থনীতিকে করেছে সমৃদ্ধ এবং অনেক বেকার মানুষ কে করেছে স্বাবলম্বী।
শুধু তাই নয় গবাদি পশু পালন বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সাহায্য করছে।অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে আমাদের দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে।তাই গবাদি পশু পালন আমাদের অর্থনীতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।

গরু মোটাতাজাকরণ ও আনুমানিক লাভ ক্ষতি

গরু হল একটি গৃহপালিত পশু। গ্রামের অধিকাংশ লোকই গরু পালন করে থাকেন গরু পালন করে থাকেন। আবার অনেক ব্যক্তি বাড়িতে গরু পালন করেন। তবে সব গরুর স্বাস্থ্যই সমান হয় না। কোন কোন গরু অধিক স্বাস্থ্যকর, কোন কোন গরু অপেক্ষাকৃত কম স্বাস্থ্যকর হয়। আমাদের মধ্যে যারা গরু পালন করে থাকেন, তাদের মধ্যে কারও কারও গরু শারীরিকভাবে দুর্বল থাকে এবং শক্তিশালী ও কম হয়।তাই আমাদের জেনে নেওয়া দরকার যে গরুকে কিভাবে মোটাতাজা করে তুলতে হবে এবং এর আনুমানিক লাভ-ক্ষতি বা কী? চলুন জেনে নেই–

সময়ের আগেই ভূমিষ্ঠ হলে গরু সাধারণভাবেই একটু কম শক্তিশালী এবং কম পুষ্টি সম্পন্ন হয়।তোলার অত্যন্ত সহজ এবং বিভিন্ন উপায় রয়েছে।
১। গরুর বয়স অনুযায়ী তিন বেলা খাবারের সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ খড় দিতে হবে। মাত্রাতিরিক্ত দেওয়া যাবে না।
২। গরুকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করাতে হবে। অবশ্যই বিশুদ্ধ পানি।
৩। সপ্তাহে অন্তত একবার গরুকে
ভেটেনারি ডাক্তার ডেকে চেকআপ করিয়ে নিতে হবে।
৪। গরুর দুধের পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য গরুকে প্রচুর পরিমাণে ঘর খাওয়াতে হবে।
৫। শুধুমাত্র খড় না খাইয়ে গরুকে মাঝেমধ্যে সবুজ ঘাস ও খাওয়াতে হবে। এতে গরু ধীরে ধীরে মোটাতাজা ও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
৬। গরুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন মত ব্যবস্থা নিতে হবে অর্থাৎ গরুকে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধের জন্য টিকাদান করতে হবে। এতে গরু শারীরিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠবে এবং মোটাতাজা হবে।
৭। গরুর স্বাস্থ্যকর উন্নতির জন্য গরুকে ভুসি খাওয়াতে হবে।
৮। হবে এবং যথাযথভাবে গরুকে চিকিৎসা করতে হবে। কারণ ক্ষুদ্র সমস্যা থেকেই অনেক বড় ধরনের কোনো অসুখ হতে পারে যা গরুর স্বাস্থ্য নষ্ট করে দিতে পারে।
৯। গরুকে গৃহবন্দি অবস্থায় না রেখে মাঝে মাঝে গরুকে এদিক-ওদিক হাঁটাহাঁটি করতে দিতে হবে, এতে গরুর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং গরু মোটাতাজা হয়ে উঠবে।
১০।গরুকে যথাসম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন স্থানে রাখতে হবে এবং গরুর মলমূত্র ত্যাগের সাথে সাথেই তা পরিষ্কার করে দিতে হবে।

গবাদি পশু পালন একটি লাভজনক প্রক্রিয়া ও গরু মোটাতাজাকরণ ও আনুমানিক লাভ ক্ষতি

গবাদি পশু পালন একটি লাভজনক প্রক্রিয়া ও গরু মোটাতাজাকরণ ও আনুমানিক লাভ ক্ষতি

গরু আবার অধিক মোটাতাজা হয়ে গেলে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। অধিক স্বাস্থ্যকর গরু যে কোনো ছোটখাটো রোগেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। গরুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে গরু অধিক স্বাস্থ্যকর হয়ে উঠলে।স্বাস্থ্যকর গরুর দুধ দানের ক্ষমতা কমে যায়। অধিক স্বাস্থ্যকর গরুর মাংস খাওয়ার মাধ্যমে মানবদেহে ও নানা রকমের খারাপ রোগের সৃষ্টি হতে পারে।

কৃত্রিমভাবে নানারকম রাসায়নিক দ্রব্যাদি উপস্থিত থাকে। এ ধরনের দ্রব্যাদি মানুষের খাওয়ার উপযোগী নাও হতে পারে। এছাড়া কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা গরুর দুধ ও মাংস মানুষের জন্য ক্ষতিকর। ক্যান্সার সৃষ্টির কারণ হলো এরকম কৃত্রিম স্বাস্থ্য যুক্ত গরুর দুধ ও মাংস খাওয়া।

তবে এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা লাভবান হয়ে থাকেন কারণ মাত্র দুই বছর ,লালন-পালন করে একটি ছোট বাছুর বাজারজাত করা যায়। ফলে গরু মোটাতাজাকরণের আর্থিক লাভ হলেও তা মানুষের জন্য ক্ষতিকর। কারণ সাধারণ মানুষ বাজার থেকে কেনা মাংস খেয়ে থাকে। এতে তাদের স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই গরু মোটাতাজাকরণের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক নিয়ম অবলম্বন করতে হবে। গরুকে প্রাকৃতিক ভাবে ঘাস খরকুটো প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে দিতে হবে। খুব জরুরী না হলে গরুকে কোন রাসায়নিক দ্রব্যাদি ইনজেকশনের মাধ্যমে দেয়া যাবে না। এভাবে ব্যবসায় লাভবান হওয়া এবং সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের উন্নতি করা সম্ভব।

আরো জানতে 

গ্যাস্ট্রিক এর লক্ষণ গুলো কি কি

You may also like

Leave a Comment

Adblock Detected

Please support us by disabling your AdBlocker extension from your browsers for our website.