ইংরেজি বছরের শেষ দিন হল’ 31 শে ডিসেম্বর। এই দিনটির মাধ্যমে ইংরেজি বছর বিদায় নেয়। প্রতিবছর কোন দিনটি অত্যন্ত কোলাহলপূর্ণ ভাবে উদযাপন করা হয়। শহরের অলিতে গলিতে আলোকসজ্জা ,ব্যান্ড পার্টি, নাচ গান এবং হৈ-হুল্লোড়ে মেতে ওঠে সমগ্র জনতা। যেকোনো বয়সের ছেলেমেয়েরা বাধাহীনভাবে পার্টি এবং অন্যান্য উৎসবে অংশগ্রহণ করে। রাতব্যাপী চলে এ আয়োজন। বছরের শেষ দিন টিকে উশৃংখলভাবে উদযাপন করে বেশিরভাগ মানুষ। তবে এভাবে বছরকে বিদায় দেওয়া মোটেও যুক্তিসঙ্গত নয়। বরং এ ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মানুষের অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যায়। নানা ধরনের অপরাধ সৃষ্টি হয়। যেমন রাত ব্যাপী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা মেয়েদের জন্য মোটেও নিরাপদ নয়।
এমনকি এসব অনুষ্ঠানে মদ্যপান সহ নানা ধরনের নেশা জাতীয় দ্রব্য বেশিরভাগ মানুষ সেবন করে থাকে। এটি একটি ধর্মীয় অনুশাসন বহির্ভূত কাজ। এখনো পার্টি ও অন্যান্য অনুষ্ঠান রাতব্যাপী চলার কারণে শব্দদূষণ সহ নানা রকম সমস্যার সৃষ্টি হয়। সামাজিক নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটে। মানুষের মধ্যে শৃঙ্খলা নষ্ট হয়ে যায়। বছরের শেষ দিনটি ইবাদত ও অন্যান্য সমাজসেবামূলক ভালো কাজে ব্যয় করলে সবার জন্য কল্যাণকর হয়। যেমন বছরের শেষ দিনে, অনাথ ও এতিমদের জন্য কিছু খাবারের ব্যবস্থা করা যায়। এতে তারা বছরের একটি সুন্দর দিন উপভোগ করবে। কারণ হলো বাচ্চাদের কাছে এক বেলা খাবার ই একগাল হাসি এনে দিতে পারে। অন্যদিকে, ব্যন্ড পাটি ও আলোকসজ্জার আয়োজন করা হলে, সমাজের ধনীরা তা উপভোগ করে।
আমাদের সমাজ শুধুমাত্র ধনী দেশ নিয়ে গঠিত না। বরং আমাদের সমাজের দরিদ্র মানুষের সংখ্যাই বেশি। তাহলে সমাজের গরিষ্ঠ সংখ্যক মানুষের কল্যাণে যা করা হবে সেটাই সমাজের জন্য কল্যাণকর। আলোকসজ্জা ও পার্টির আয়োজন করা হলে সমাজের দরিদ্র শ্রেণীর জন্য কোন উপকার বা কল্যাণ বয়ে আনবে না। সারারাত ব্যাপী অনুষ্ঠান চলে, এই অনুষ্ঠানে সব বয়সের মানুষ অংশগ্রহণ করে। বিশেষ করে যুবক যুবতীরা এ ধরণের অনুষ্ঠানে আনন্দ বেশি করে থাকে। একজন যুবতী মেয়ের জন্য সারারাত ব্যাপী বাইরে থাকা মোটেও নিরাপদ নয়। কি ধরণের অনুষ্ঠানে নানা ধরনের অনুষ্ঠানে অপরাধমূলক কাজ হয়ে থাকে। নারী ও শিশু অপহরণ করে পাচার করা হয়,এছাড়া ধর্ষণসহ নানা ধরনের জঘন্যতম অপরাধ এ ধরনের অনুষ্ঠানে হতে পারে। প্রত্যেক বছরের শেষ দিনটি ধর্মীয় অনুশাসন মতে চললে তা সবার জন্য কল্যাণকর।
কোন ধর্মই বেহায়াপনা সমর্থন করে না। ইসলাম ধর্মের মানুষের উচিত বছরের বিশেষ দিনটি সারা দিন এবং রাত ব্যপী ইবাদতের মাধ্যমে কাটানো। এছাড়া হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উচিত নিজের ধর্মীয় অনুশাসন পালন করা। সুন্দর এই দিনটি গরীবদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করার মাধ্যমে পালন করা যায়। সারারাত ব্যাপী ফানুস উড়িয়ে হয়তো সাময়িক আনন্দ পাওয়া যায়, কিন্তু একজন গরীব মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে আনন্দ পাওয়া যায় তা চিরস্থায়ী। পুরনো বছরকে বিদায় দিয়ে নতুন বছর শুরু করার আশায় বুক বাঁধে মানুষ। মানুষের জন্য কল্যাণকর কিছু করার চেষ্টা করাই শ্রেয়। সাজগোজ, উৎসব অনুষ্ঠান ইত্যাদি সারা বছরে আমরা কমবেশি করে থাকি। কিন্তু বছরের এই শেষ দিনে আমাদের উচিত পুরাতন বছরের গ্লানি হতাশা দুঃখ-কষ্ট অসহায়ত্ব ভুলে গিয়ে মানুষের জন্য ভালো কিছু করা এবং নতুন আশায় বুক বাঁধা। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করা একটি সুন্দর নতুন বছরের জন্য। এবং একটি পুরো বছর জীবিত থাকা, সুস্থভাবে পুরো একটি বছর পার করার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।
2 comments
[…] ইংরেজি বছরের শেষ দিন হল’ 31 শে ডিসেম্ব… ইংরেজি ভাষা যে কারনে এত ক্ষ্যাতি লাভ […]
[…] ইংরেজি বছরের শেষ দিন হল’ 31 শে ডিসেম্ব… মন খারাপ থাকলে কি করবেন মানুষ […]