best counter

গ্যাস্ট্রিক থেকে দূরে থাকার উপায়

by mirajamin
Rate this post

গ্যাস্ট্রিক থেকে দূরে থাকার উপায়

 

গ্যাস্ট্রিক কোনো রোগ নয়। পাকস্থলীর এক অস্বস্তিকর অবস্থা। গ্যাস্ট্রিক কোন রোগ না হলেও অনেক সময় মানুষের অকাল মৃত্যুর জন্য গ্যাস্ট্রিক ই যথেষ্ট। আমরা জেনে নেবো গ্যাস্ট্রিক থেকে বাঁচার কিছু উপায়। প্রথমত গ্যাস্ট্রিক হয়ে থাকে মানুষের খাদ্য নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে। দৈনন্দিন খাদ্য চাহিদা একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ম এর আওতাভুক্ত।

 

শর্করা, আমিষ ,স্নেহ ,খনিজ লবণ, ভিটামিন , পানি ইত্যাদি একটি সুনির্দিষ্ট নিয়মের আওতায় আমরা গ্রহণ করে থাকি। আমাদের পাকস্থলী নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্য হজম করে অভ্যস্ত। কোন ব্যক্তির পাকস্থলী প্রতিদিন যে পরিমাণ খাবার হজম করে অভ্যস্ত হয় তার চেয়ে বেশি খাবার গ্রহণ করলে পাকস্থলীতে অস্বস্তিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। ফলস্বরূপ তৈরি হয় গ্যাস্ট্রিক। গ্যাস্ট্রিক থেকে পাকস্থলীতে আলসার হতে পারে।

 

এমনকি এই আলসার একসময়ে ক্যান্সারে রূপ নেয়। ফলস্বরূপ মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে। আমাদের পাকস্থলী প্রাচীর থেকে এসিড নিঃসৃত হয়। হাইড্রোক্লোরিক এসিড খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে। যদি খাদ্য গ্রহণের মাত্রা পরিমাণমতো না থাকে তাহলে তাকে স্খলিত হাইড্রোক্লোরিক এসিডের পরিমাণ ঠিক থাকেনা।

 

ফলে পাকস্থলীতে এসিডিক বা অম্লীয় অবস্থার সৃষ্টি হয়। গ্যাস্ট্রিক হওয়ার কিছু উপসর্গ হলো বুক জ্বালা করা , মুখে টক ভাব, ক্ষুধামন্দা, দুর্গন্ধযুক্ত ঢেকুর তোলা, বুকে চাপ অনুভব করা, কর্মে অনীহা ইত্যাদি। অনেক সময় গ্যাস্ট্রিকের কারণে বুকে ব্যথা করতে করতে হৃদপিন্ডে কালো দাগ পড়ে যায়। এই দাগ থেকে অনেক সময় ভয়ংকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। অন্ননালীর প্রাচীরে গ্যাস্ট্রিক জমা হলে অন্ননালীর প্রাচীর ফুটো হয়ে যায়। ফলে নির্দিষ্ট পরিমাণের একটু বেশি খাবার গ্রহণ করলে খাবার পাকস্থলীর বাইরে চলে যায় ফলস্বরূপ ভয়ংকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। এসিডিটি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য শুধুমাত্র নিয়ম মাফিক জীবন যাপন করাই যথেষ্ট।

 

কারণ খাদ্যাভ্যাসের অনিয়ম করার কারণেই গ্যাস্ট্রিক হয়ে থাকে। প্রথমত ব্যক্তিবিশেষে বিভিন্ন খাবারের এসিডিটি দেখা দিতে পারে। অধিক তেল-চর্বিযুক্ত খাবার যেমন ভাজাপোড়া ,ঝালমুড়ি, ফুচকা, চটপটি ,পরোটা , পুরি ইত্যাদি খাবার পরিহার করতে হবে।এসব খাবারের বেশিরভাগই তৈরি হয় রাস্তায় খোলা অবস্থায় ছোটখাটো দোকানে। এসব খাবার মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয় বরং আমাদের শরীরের ক্ষতি করে থাকে। রাস্তায় তৈরি খাবার গুলো ঢেকে রাখা হয়নি ফলে রাস্তার ধুলাবালি ময়লা ও অন্যান্য রোগজীবাণু খাবার কে আক্রমণ করে। সেই খাবার খেয়ে আমাদের গ্যাস্ট্রিক সহ নানা রকম পেটের অসুখ হতে পারে। রাস্তায় তৈরি খাবার গুলো মুখরোচক হলেও তা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাছাড়া

 

ফাস্টফুড যেমন বার্গার, পিৎজা, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, এমনকি বাইরে তৈরি নুডুলস, চিপস, পাপড় ইত্যাদি খাবার এসিডিটির জন্য দায়ী। যতদূর সম্ভব এসব খাবার আমাদের পরিহার করতে হবে। দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় মাছ মাংস শাক সবজি ডাল ইত্যাদি রাখতে হবে। সময়মতো এবং নিয়মমাফিক এসব খাবার গ্রহণ করতে হবে।রান্না করতে হবে যেন খাবার স্বাস্থ্যসম্মত হয়। গ্যাস্ট্রিক থেকে বাচার অনেক প্রাকৃতিক উপায় রয়েছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে পানিতে মেথি ভিজিয়ে সেই পানি খেলে গ্যাস্ট্রিক দূর হয়ে যায়। তাছাড়া হালকা গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে সেই পানি খেয়ে নিলে পেটের অস্বস্তিকর অবস্থা থেকে আরাম পাওয়া যায়। গ্যাস্ট্রিক থেকে বাচার অন্যতম উপায় হল পচা বাসি খাবার পরিহার করা। আমরা অনেক সময় খাবার নষ্ট করতে চাই না,খাবার বাসি হয়ে গেলে সেই খাবার আমরা পুনরায় গ্রহণ করে থাকি। একটা বিষয় আমাদের কাছে অজানা যে, খাবার পৌঁছে দেওয়ার সাথে সাথে সেখানে ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি হয়। খাদ্য শিকল এর ভাঙ্গন সৃষ্টি করে ব্যাকটেরিয়া। সেই ব্যাকটেরিয়া আমরা খাবারের সাথে গ্রহণ করলে আমাদের পেটে অস্বস্তিকর অবস্থার অর্থাৎ গ্যাস্ট্রিক হয়ে থাকে। সুতরাং আমাদের পচা বাসি খাবার পরিহার করতে হবে।

 

তাছাড়া ভারী প্রকৃতির খাবার যেমন গরুর মাংস রোস্ট পোলাও বিরিয়ানি ইত্যাদি পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। অধিক তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া যাবেনা। যাদের গ্যাস্ট্রিক সমস্যা অধিক গুরুত্ব পর্যায়ে চলে গেছে,তাদের উচিত অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। চিকিৎসকের খাদ্য তালিকা অনুযায়ী খাদ্য গ্রহণ করা এবং সেই সাথে প্রয়োজনীয় ঔষধ সেবন করা। গ্যাস্ট্রিক কোন রোগ না হলেও মানুষের মৃত্যুর জন্য এটাই যথেষ্ট।সুতরাং আমাদের সবাইকে সাবধান থাকতে হবে যেন আমাদের গ্যাস্ট্রিক আক্রমণ করতে না পারে।

 

নিয়মমাফিক খাদ্যগ্রহণ, খাদ্যতালিকায় পুষ্টিকর খাবার যেমন শাক সবজি ,মাছ ,বিশেষ করে ছোট মাছ, ডাল, ঋতুকালীন ফলমূল ইত্যাদি গ্রহণ করতে হবে। নিমের রস গ্যাস্ট্রিক দূর করার সবচেয়ে ভালো উপায়। নিমের রস খেতে তিক্ত হলেও, এর উপকারিতা অনেক। অনেক সময় এলোপ্যাথিক ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। যেমন মোটা হয়ে যাওয়া, হাত পা কাপুনি, চুল পড়ে যাওয়া সহ আরো অনেক রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিমের পাতা প্রাকৃতিক গুণসম্পন্ন। কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে না। ফলস্বরূপ গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এজন্য আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।

 

সঠিক খাদ্য তালিকা অনুসরণ করতে হবে।গ্যাস্ট্রিকে আক্রান্ত হয়ে গেলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে এবং ঔষধ গ্রহন করতে হবে। তবেই আমাদের একটি গ্যাস্ট্রিক মুক্ত সুস্থ জীবন নিশ্চিত হবে।

 

You may also like

Leave a Comment

Adblock Detected

Please support us by disabling your AdBlocker extension from your browsers for our website.