233
সুস্থ মন ও সুন্দর জীবন একে অপরের সাথে সম্পর্কিত। মানসিক সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো হচ্ছে পরিবারকে সময় দেওয়া খেলাধুলা করা এবং নিজের মানসিকতা ঠিক রাখা। মন ভালো থাকলে শরীর ভালো থাকে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মানব জীবনকে সহজ থেকে সহজতর ও এবং আরামদায়ক করেছে। বিজ্ঞানের কল্যাণে সবকিছুই আমাদের হাতের মুঠোয়। পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে বসে আমরা যে কোন খবর পেতে পারি,পৃথিবীর কোথায় কি ঘটছে এবং বিভিন্ন দেশের তথ্যাদি আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে পেয়ে যাই। আমরা বেশিরভাগ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করি মোবাইল ফোনে।
প্রযুক্তির এত ভালো দিক থাকলেও বেশিরভাগ শিশুরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রযুক্তিকে আসক্তিতে পরিণত করেছে। তারা মানসিক সুস্থতার জন্য ব্যবহার করছে মোবাইল ফোন। একটা সময় ছিল যখন শিশুরা অবসর সময় কাটাতো বন্ধুবান্ধবের সাথে খেলাধুলা করে এবং আড্ডা দিয়ে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ শিশুই নিজেদের অবসর সময় কাটায় মোবাইল ফোনে গেম খেলে এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে। মোবাইল ফোনের আসক্ত হয়ে বেশির ভাগ শিশু তাদের মানসিক ক্ষতি করেছে। মোবাইল ফোন ব্যবহার করে তারা প্রচুর সময় নষ্ট করছে। এতে তাদের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। বাবা-মা বুঝিয়েও অনেক শিশুকে মোবাইল ফোন থেকে দূরে রাখতে পারছে না। মোবাইল ফোন ব্যবহার শিশুদের নেশায় পরিণত হয়েছে। তারা বাইরে গিয়ে খেলাধুলা ভুলে গেছে। এদের বেশির ভাগ সময় তারা মোবাইল ফোনে দিচ্ছে। বর্তমানে অনলাইন ক্লাস ব্যবস্থা থাকার অজুহাতে অনেক শিশু খারাপ দিকে ধাবিত হচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। তাদের মধ্যে সাইবার অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে।
ইন্টারনেটে এমন অনেক কিছু আছে যা শিশুদের জন্য উপযুক্ত নয়, কিন্তু এসব বিষয়ে উন্মুক্ত হওয়ার কারণে অনেক শিশুর ছোটবেলায় মানসিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এতে তাদের মধ্যে অনেক রকম অপরাধের প্রবণতা বাড়ছে। ক্লাস নোট এবং অন্যান্য পড়ার বিষয় শিশুরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে পেয়ে যায় ফলে নিজেরা পরিশ্রম করে পড়ার বিষয় গুলো ঘেটে দেখে না। এতে তাদের সৃজনশীলতা বিনষ্ট হচ্ছে। অনেক বাবা-মা মনে করেন মোবাইল ফোন ব্যবহার করে তাদের বাচ্চারা স্মার্ট হচ্ছে, তারা মনে করেন বাচ্চারা সবকিছু শিক্ষিত হচ্ছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে। কিন্তু তারা ভুলে যায় যে ইন্টারনেটের জগতে সময় দিতে গিয়ে তারা নিজেদেরকে সময় দিতে ভুলে যায়। আপনজনদের সময় দেয় না, বরুণ ওই সময়ে সবাই মোবাইল ফোনে ব্যস্ত থাকে।
মোবাইল ফোন থেকে এক ধরনের খারাপ রশ্মি বের হয়, শিশুদের চোখের জন্য খুবই ক্ষতিকর। অনেক শিশুই চোখের নানা রকম সমস্যায় ভুগছে মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে। এমনকি মোবাইল ফোন ব্যবহারে শিশুদের মস্তিষ্কের ক্ষতি করছে। কারণ শিশুদের মস্তিষ্ক অনেক স্পর্শ কাতর এবং সজীব, কি কারনে মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর রশ্মি তাদের মস্তিষ্কের বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্যান্সারের মত খারাপ ব্যধিতে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। শিশুরা বাইরের পরিবেশে মিশতে ভুলে গেছে। তাদের ভবিষ্যৎ ক্রমেই অন্ধকারের দিকে দিকে যাচ্ছে। কিন্তু এই বিষয়টা তারা নিজেরা উপলব্ধি করতে পারছে না। কারণ তাদের বাবা মায়েরা চোখ থেকেও অন্ধ। মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে তাদের ক্ষুধামন্দা, চোখের সমস্যা, মাথা ব্যথা, পড়াশোনায় অমনোযোগ সহ বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিচ্ছে। মূলত বিজ্ঞান যেমন কল্যাণময় ঠিক তেমনি ক্ষতিকারক ও বটে।
বিজ্ঞানের কল্যাণে নির্ভর করে তার ব্যবহারের উপর। মোবাইল ফোন অবশ্যই একটি প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি, কিন্তু তার অপব্যবহার এবং অতি ব্যবহার মানবজীবনে বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।