কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল। বাংলাদেশ একটি সুপরিচিত ও সুস্বাদু ফল হল কাঁঠাল।মানুষের দেহে যেসব পুষ্টির প্রয়োজন প্রায় সবই আছে কাঁঠালের মধ্যে। বেশিরভাগ মানুষ পুষ্টির জন্য কাঁঠাল খেয়ে থাকেন। তবে একশ্রেণীর মানুষ কাঁঠাল দেখে নাক সিটকান। তারা মনে করেন কাঁঠাল গরিবের খাদ্য। তা কিন্তু নয় কাঁঠাল হল পুষ্টির রাজা। পুষ্টিবিদরা বলেছেন কাঁঠাল পুষ্টিগুণে ভরপুর। বিশেষ করে এই করোনাকালে কাঁঠাল খেলে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়।কাঁঠালে বিটা ক্যারোটিন ভিটামিন b1 b2 পটাশিয়াম ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম সহ নানা রকমের পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়।এই সকল উপাদান আমাদের শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করে এবং এর পাশাপাশি ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে।
কাঁঠালের থাকা ভিটামিন এর কল্যাণে মাথার চুল ভালো থাকে। দৃষ্টিশক্তি বাড়ে ও চোখের সমস্যা কমে।
এছাড়া কাঁঠালে আছে ভিটামিন সি যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং এজমা কাশি সর্দি ও ক্যান্সারের মতো রোগ দূর করে।
কাঁঠাল রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে হূদেরাগের ঝুঁকি কমায়। কাঁঠাল শর্করার উৎস হিসেবে কাজ করে এবং এতে প্রায় কোন কোলেস্টেরল নেই বললেই চলে।
কাঁঠালে আছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।আমাদের দেহকে ক্ষতিকর রোগ-জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা করে এটি। এছাড়াও আমাদেরকে সর্দি কাশি রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। কাঁঠালে চর্বির পরিমাণ খুবই সামান্য তাই এই ফল খাওয়ায় ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা কম।
কাঁঠাল পটাশিয়ামের একটি ভালো উৎস। ১০০ গ্রাম কাটালে পটাশিয়ামের পরিমাণ ৩০৩ মিলিগ্রাম। এই পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে তাই কাঁঠাল উচ্চ রক্তচাপ উপশম করে।
কাঁঠালে আছে প্রচুর ভিটামিন এ যা রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে।
আমাদের দেহে প্রাকৃতিক ভাবে ভিটামিন-সি তৈরি হয় না। ভিটামিন সি এর জন্য আমাদের নানা রকম খাদ্য উপাদান গ্রহণ করতে হয়। কাঁঠালের রয়েছে প্রচুর ভিটামিন-সি।
এছাড়া কাঁঠালে খনিজ উপাদান আয়রন থাকে যা দেহের রক্তস্বল্পতা দূর করে।
কাঁঠালে আছে বিপুল পরিমাণ পুলিশ ম্যাঙ্গানিজ যা রক্তের শর্করা বা চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে।
ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম কাঁঠালের উপস্থিত যা মানব দেহের হাড়ের গঠন ও হাড় শক্তিশালীকরণে ভূমিকা পালন করে। এছাড়া কোথাও কেটে গেলে রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে কাঁঠাল।
ভিটামিন b6 হূদেরাগের ঝুঁকি কমায় কাঁঠালি উপস্থিত।
৬ মাস বয়সের পর থেকে মায়ের দুধের পাশাপাশি শিশুকে কাঁঠালের রস খাওয়ালে শিশুর ক্ষুধা নিবারণ হয়। এছাড়া তার প্রয়োজনীয় ভিটামিনের অভাব পূরণ হয়।
প্রতিদিন ২০০ গ্রাম তাজা পাকা কাঁঠাল খেলে গর্ভবতী মহিলা ও তার গর্ভধারণ কৃত শিশুর সব ধরনের পুষ্টির অভাব দূর হয়। দুগ্ধদানকারী মা পাকা কাঁঠাল খেলে দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
এছাড়া কাঁঠালের বিচি অত্যন্ত উপকারী। কাঁঠালের বিচিতে রয়েছে ভিটামিন b1 ও ভিটামিন বি 12।
এছাড়া ভিটামিন এ ভিটামিন সি এম ইন না সিন ক্যালসিয়াম উপস্থিত মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
কাঁঠালের বিচি হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এবং বদহজম রোধ করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। এতে থাকা প্রোটিন মানসিক চাপ কমাতে অত্যন্ত কার্যকরী । এটি বলিরেখা দূর করে ও ত্বকের বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকায় এটি শিশুদের চোখের স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তির ও শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। এটি খেলে চুলের আগা ফাটার সমস্যা রোধ হয় এবং চুল পড়া কমে যায়। এটি নিয়মিত খেলে শরীরে আয়রন এর মাত্রা বেড়ে যায়। এছাড়া কাঁঠালের বিচি অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।
সব রকম ভিটামিন ধারণ করার জন্য এবং বিভিন্ন রকম রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করার জন্য কাঁঠাল ফলের রাজা। সব রকম পুষ্টি উপাদান এটি সঠিক মাত্রায় উপস্থিত থাকে। এজন্য দেহকে সুস্থ রাখতে এবং সব রকম পুষ্টি উপাদান পেতে হলে আমাদের কাঁঠাল খাওয়া জরুরি