রমজান মাসে কিভাবে আপনার শরীরের যত্ন নিবেন:
শরীর ও মন একে অপরের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। শরীর ভালো থাকলে মানুষ মানসিক দিক দিয়েও ভালো থাকে। শরীর অসুস্থ হলে মানুষ কোন কিছুতেই মন বসাতে পারে না। তাই সুস্থ ও সুন্দর জীবনের জন্য সুস্থ শরীরে গুরুত্ব অপরিসীম।
আমরা জানি রমজান মাসে আমাদের রোজা রাখতে হয়। একটা দীর্ঘ সময় পানাহার থেকে বিরত থাকতে হয়।
দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকা আমাদের শরীরের উপর বিভিন্ন প্রভাব ফেলতে পারে। আমাদের শরীরে প্রতিনিয়ত নানা ধরনের জৈব রাসায়নিক ক্রিয়া বিক্রিয়া সংঘটিত হয়। আর এই জীবনে কি ক্রিয়া বিক্রিয়ার জন্য প্রয়োজন শক্তি। এই শক্তি আসে খাদ্য থেকে। যখন আমরা রোজা রাখি তখন শরীরে খাদ্যের ঘাটতি হয়।
কারণ একটি দীর্ঘ সময় আমরা না খেয়ে থাকি। এতে শরীরে বিভিন্ন বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়া সম্ভাবনা থাকে।
তাই পবিত্র রমজানে নিজেকে সুস্থ রাখতে আপনি কিছু উপায় মেনে চলবেন।
প্রথমত আপনি পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করবেন। ইফতারের খাদ্য তালিকায় ফরমুল এবং শাক সবজির পরিমাণ বেশি রাখবেন।
শাকসবজি আমাদেরকে বিভিন্ন রকম শারীরিক সমস্যা যেমন বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয়।
শাকসবজি খেলে ত্বক ভালো থাকে এবং শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় থাকে।
ফর মনের মধ্যে আপনি কলা, আপেল ,খেজুর ,বাঙ্গি, তরমুজ ও বিভিন্ন রসালো ফল খেতে পারেন।
রমজান মাসে ফল খেলে অনেকটা সুস্থ থাকা যায়। ফুলমূল বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের সমৃদ্ধ।
রমজান মাসের সুস্থ থাকতে আপনি তাড়াতাড়ি ঘুমানোর অভ্যাস করুন। যেহেতু সেহেরী খাওয়ার জন্য অনেক রাতে আপনাকে একবার উঠতে হয় তাই আপনার ঘুমের ঘাটতি হতে পারে।
তাই একটু সকাল সকাল ঘুমিয়ে পড়ার চেষ্টা করবেন। কারণ ঘুমের মাধ্যমেই আমাদের দেহের নতুন শক্তি আসে। ঘুম কম হলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং কোন কাজে মন বসে না।
রমজান মাসে দিনের বেলায় তেমন কোনো কাজ থাকে না। কারণ দুপুর বেলা খাওয়া-দাওয়া কোন আয়োজন করা হয় না। তাই দিনের বেলা কিছুটা ঘুমিয়ে নিলে আপনার শরীর ভালো লাগবে।
ইফতারে অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবার থেকে দূরে থাকুন। ভাজাপোড়া খাবার আমাদের শরীরের ভারসাম্য নষ্ট করে। শরীরে অ্যাসিডিটি সৃষ্টি করে।
সারাদিন না খেয়ে থাকার পর হঠাৎ করে খাবার খেলে আপনার বুকে জ্বালা করতে পারে। এমনকি অতিরিক্ত অ্যাসিডিটির জন্য আপনার বমি হয়ে যেতে পারে। তাই এই সংবেদনশীল মুহূর্তে খুবই সাবধান থাকবেন।
যতটুকু সময় সম্ভব আপনি পানি পান করবেন। রোজা রাখলে শরীরে পানির অনেক ঘাটতি হয়।
একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ গ্লাস পানি পান করা উচিত। কিন্তু রোজা রাখার কারণে অনেক সময় তা সম্ভব হয় না। তাই ইফতার ও সেহেরির মধ্যবর্তী সময়ে প্রচুর পানি পান করুন।
রোজার মাসে বেশি করে খেজুর খাবেন। খেজুর আমাদের দেহের জন্য খুব উপকারী। খেজুরে অনেক ক্যালরি আছে। রমজান মাসে সুস্থ থাকা একটি ভালো উপায় হলো, খেজুর ও শসা খাওয়া। যারা রোগা স্বাস্থ্যের অধিকারী তারা খেজুর খাওয়ার মাধ্যমে নিজেদের স্বাস্থ্য সুন্দর করতে পারেন এবং ওজন বাড়াতে পারেন।
এছাড়া রমজান মাসের বিভিন্ন রকম যুদ্ধজাত পণ্য যেমন দ ই, খেতে পারেন।
দেহে পানির ঘাটতি পূরণ করার জন্য আপনি স্যালাইন বা জুস খেতে পারেন। তবে বাজার থেকে কেনা জুস না খাওয়াই ভালো কারণ বাজারে তৈরি জুসের মধ্যে বিভিন্ন রকম কেমিক্যাল মেশানো থাকে।
এর পরিবর্তে আপনি বিভিন্ন ফলের জুস খেতে পারেন। ফলের জুস আপনার দেহে বিভিন্ন রকম পুষ্টি উপাদান এবং পানির ঘাটতি পূরণ করবে।
মানবদেহ সঠিকভাবে কাজ করতে এবং সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন ধরণের পুষ্টির প্রয়োজন। এই পুষ্টিগুলিকে ছয়টি ভাগে ভাগ করা যায়: কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ এবং জল।
প্রতিটি ধরনের পুষ্টি একটি ভিন্ন উদ্দেশ্যে কাজ করে এবং সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে একটি অনন্য ভূমিকা পালন করে। উদাহরণস্বরূপ, কার্বোহাইড্রেট শক্তি সরবরাহ করে, যখন প্রোটিন টিস্যু তৈরি এবং মেরামত করতে সহায়তা করে। ভিটামিন এবং খনিজগুলি বিভিন্ন শারীরিক প্রক্রিয়াগুলিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং চর্বিগুলি শক্তি সরবরাহ করে এবং নির্দিষ্ট ভিটামিন শোষণ করতে সহায়তা করে।
শরীরের পুষ্টির চাহিদা মেটানোর জন্য প্রতিটি পুষ্টির শ্রেণী থেকে বিভিন্ন ধরনের খাবারের অন্তর্ভুক্ত একটি সুষম খাদ্য থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
সর্বোপরি নিয়ম মেনে রমজান মাসের খাদ্য গ্রহণ করতে হবে এবং কোন ঔষধ নেওয়ার রুটিন থাকলে তা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেহেরী ও ইফতারের মধ্যবর্তী সময়ে তালিকাভুক্ত করতে হবে
রমজান মাসে বেশি খেজুর খাওয়া অনেক মুসলিম সম্প্রদায়ের একটি সাধারণ অভ্যাস। রমজানে রোজা ভাঙ্গার জন্য খেজুর একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ এগুলো শক্তি ও পুষ্টি জোগায়। এটি নবী মুহাম্মদের পছন্দের খাবার বলে মনে করা হয় এবং এটিকে আশীর্বাদ ও পুষ্টির প্রতীক হিসেবে দেখা হয়।
আমাদের জেনে নেওয়া জরুরী দাঁতকে সুস্থ রাখতে কি কি করনীয়।
1 comment
[…] […]