কারিগরি শিক্ষা কি এবং এর প্রয়োজনীয়তা
কারিগরি শিক্ষার অর্থ হল কোন একটি বিষয়ের উপর হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ লাভ করে বাস্তব জীবনে তা প্রয়োগের জন্য পারদর্শী হয়ে ওঠা।
এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি শিক্ষা। প্রতিটি শিক্ষার্থীর উচিত সে কি বিষয়ে নিয়ে পড়ছে সে সম্পর্কে হাতে কলমে শিক্ষা লাভ।
তাহলে বাস্তব জীবনের যেকোনো সমস্যায় সে তা প্রয়োগ করে লাভবান হতে পারবে।
আজকে আমরা জানবো কারিগরি শিক্ষার বিভিন্ন প্রায়োগিক দিক।
বর্তমানে কারিগরি শিক্ষাকে অনেক প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
কারিগরি শিক্ষার কিছু উদাহরণ দিলে ব্যাপারটি আপনাদের কাছে পরিষ্কার হবে।
ধরুন একটি শিক্ষার্থী বইয়ে কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা পড়ল কিভাবে সেলাই করতে হয় এবং জামা কাপড় তৈরি করতে হয়।
তারই শিক্ষার্থী সে যদি হাতে-কলমে লাভ করে এবং বাস্তবে প্রয়োগ করে তাহলে তা হবে কারিগরি শিক্ষা।
কারিগরি শিক্ষার প্রতিটি শিক্ষার্থীকে জীবনের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজ হাতে-কলমে শেখানো হয়।
যেমন ধরুন সেলাই করা। কোন শিক্ষার্থী যদি পড়ার পাশাপাশি হাতে-কলমে সেলাই করতে শেখে তাহলে ভবিষ্যতে তার জন্য এটি একটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে।
বর্তমানে আমাদের দেশের জনসংখ্যা প্রবৃদ্ধির হার বেড়ে চলেছে। বিপুল জনসংখ্যার খাদ্যের যোগান দিতে আমাদের দেশের অর্থনীতি হিমশিম খাচ্ছে।
এমন অবস্থায় প্রতিটি মানুষকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলা একান্ত প্রয়োজনীয়।
যেকোনো কাজের মাধ্যমেই যদি সব শ্রেণীর মানুষ আত্মনির্ভরশীল হয় অর্থাৎ নিজের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিতে পারে তাহলে আমাদের দেশের অর্থনীতি অনেক উন্নত হবে।
কারিগরি শিক্ষার বিভিন্ন রকম জীবন ও কর্মমুখী কাজের শিক্ষাদান করা হয়।
আমাদের দেশে যত শিক্ষার্থী আছে সবাই এক রকম নয়। বরং স্মৃতি ধারণ ক্ষমতা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন ভিন্ন।
কেউ পড়াশোনায় অত্যন্ত পারদর্শী কেউবা কর্মমুখী শিক্ষার পারদর্শী।
অনেক বাবা-মা মনে করেন পড়াশোনায় ভালো করতে না পারলে জীবনে উন্নতি করা অসম্ভব’।
কিন্তু এ ধারণা আসলে ভুল।
যদি আপনার সন্তানের কোনো একটি বিষয়ে শখ থাকে, তাহলে তাকে তার শখের কাজটিতে পারদর্শী হয়ে ওঠার সুযোগ দিন।
ধরুন আপনার সন্তান ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের দ্রব্যাদি তৈরি করতে ভালোবাসে।
তাহলে তাকে এই বিষয়ের কারিগরি শিক্ষায় অভ্যস্ত করে তুলুন। ভবিষ্যতে আপনার সন্তানের জন্য এটি অনেক ভালো ফল বয়ে আনবে।
যারা পড়াশোনায় খুব বেশি ভাল নয় কিন্তু অন্যান্য কাজে পারদর্শী তাদের উচিত মাধ্যমিক পাশ করার পরে কারিগরি শিক্ষায় যোগদান করা।
কারিগরি শিক্ষা কার্যকর করা হলে আমাদের দেশে বেকারত্বের হার অনেক কমে যাবে।
দেশের প্রতিটা মানুষ যখন নিজের আহার জোগাড় করতে পারবে। এটি আমাদের দেশের জন্য একটি বড় সুসংবাদ।
দেশের ধনী-গরীব প্রতিটা মানুষ স্বনির্ভরশীল হয়ে উঠবে। কারো কাছে কারো হাত পেতে টাকা নিতে হবে না। দরিদ্র শ্রেণীর মানুষের উচিত পড়াশোনার খরচ বহন করতে না পারলেও অন্তত কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করা।
কারিগরি শিক্ষার অতটা কঠিন কিছু নয়। বরং কিছুটা আন্তরিকতা এবং মনোযোগ থাকলেই কারিগরি শিক্ষায় অনেক ভালো করা যায়।
এজন্য আমাদের দেশে কারিগরি শিক্ষা কার্যকর করতে হবে। মাধ্যমিক শ্রেণীর পর কারিগরি শিক্ষার আলাদা একটি শাখা রাখতে হবে। যেখানে কারিগরি শিক্ষায় পারদর্শী ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের উৎসাহ প্রকাশ এর সুযোগ পাবে।
তবে আমাদের দেশ প্রবৃদ্ধির হারে এগিয়ে যাবে। দেশের বেকারত্ব হ্রাস পাবে এবং প্রতিটা মানুষ একেকটি মানবসম্পদে পরিণত হবে।
জেনে রাখুন নিয়মিত টমেটো ও শসা খাওয়ার উপকারিতা