বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা

বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা

by Md Limon
বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা
বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা

বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা

বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা

বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা নিয়ে কিছু তথ্য প্রদান করা হল – বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি জনবহুল ও উন্নয়নশীল দেশ। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর দেশটি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে আত্মপ্রকাশ করে।বাংলাদেশের সভ্যতার ইতিহাস ক্যালকোলিথিক যুগ থেকে চার সহস্রাব্দেরও বেশি সময় ধরে চলে আসছে। দেশটির প্রাথমিক ইতিহাস আঞ্চলিক আধিপত্যের জন্য হিন্দু ও বৌদ্ধ সাম্রাজ্যের মধ্যে সংঘাত ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইতিহাস।

বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা

বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা

৬ষ্ঠ থেকে ৭ম শতাব্দী পর্যন্ত এ অঞ্চলে ইসলামের আগমন ঘটে। ত্রয়োদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে, বখতিয়ার খিলজির নেতৃত্বে সামরিক বিজয় এবং শাহ জালালের মতো সুন্নি দাউদের নিরলস প্রচেষ্টায় ইসলাম ধীরে ধীরে দেশের প্রধান ধর্মে পরিণত হয়। পরবর্তীকালে মুসলিম শাসকরা মসজিদ নির্মাণ করেন এবং ইসলাম প্রচারে অবদান রাখেন। চতুর্দশ শতাব্দীর পর থেকে, এই অঞ্চলটি সুলতান শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ শাহী বাংলা হিসাবে শাসিত হয়েছিল যা দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত করেছিল এবং আঞ্চলিক সাম্রাজ্যের উপর সামরিক আধিপত্য শুরু করেছিল। ইউরোপীয়রা তৎকালীন সময়ে এই শাহী বাংলাকে বাণিজ্যের জন্য সবচেয়ে ধনী দেশ হিসেবে উল্লেখ করত। এই অঞ্চলটি পরে মুঘল সাম্রাজ্যের অধীনে আসে এবং মুঘল সাম্রাজ্যের সবচেয়ে ধনী প্রদেশ হিসেবে বিবেচিত হয়। বঙ্গীয় সুবাহ সমগ্র মুঘল সাম্রাজ্যের জিডিপির প্রায় অর্ধেক এবং বিশ্ব জিডিপির ১২% উত্পাদন করেছিল যা সমগ্র পশ্চিম ইউরোপের চেয়ে বেশি ছিল। প্রথম দিকে শিল্পায়নের সময় এই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি শুরু হয়। তখন রাজধানী ঢাকার জনসংখ্যা দশ লাখ ছাড়িয়েছিল।

অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পর, বাংলা নবাবদের অধীনে একটি আধা-স্বায়ত্তশাসিত রাজ্যে পরিণত হয় যার শাসন শেষ পর্যন্ত নবাব সিরাজউদ্দৌলার হাতে ন্যস্ত হয়। তারপর ১৭৫৭ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি পলাশীর যুদ্ধে জয়লাভ করে এবং এলাকাটি দখল করে। বাংলা সরাসরি ব্রিটিশ শিল্প বিপ্লবে অবদান রেখেছিল, কিন্তু এটি নিজস্ব শিল্পায়নকে ধ্বংস করেছিল। পরে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি প্রতিষ্ঠিত হয়।

আধুনিক বাংলাদেশের সীমানা ১৯৪৭ সালের আগস্টে বাংলা ও ভারতের পৃথকীকরণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যখন উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটে এবং অঞ্চলটি নবগঠিত পূর্ব পাকিস্তানের অংশ হয়ে ওঠে।

বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা

বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা

১৯৭১ সালের মার্চ মাসে স্বাধীনতা ঘোষণার পর নয় মাস ধরে চলা স্বাধীনতার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিজয়ের পর পূর্ব পাকিস্তান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়। দুর্যোগ, ব্যাপক দারিদ্র্য, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং সামরিক অভ্যুত্থান। ১৯৯১ সালে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পর দেশে আপেক্ষিক শান্তি বিরাজ করে এবং দ্রুত অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধিত হয়। মানবসম্পদ ও পোশাক শিল্পের অগ্রগতির ফলে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে, যা সারা বিশ্বকে অবাক করেছে।

দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ও সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা অর্জন করেছি আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশকে। স্বাধীনতা আনার পেছনে রয়েছে প্রচুর সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের গল্প।বিশ্বের দরবারে একটি গৌরবময় দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। আমাদের এই দেশের উৎপত্তির পেছনে রয়েছে এক বিরাট ইতিহাস।
ইংরেজদের গোড়া পত্তন এবং বাংলার সূচনা আমাদের অনেকের কাছেই অজানা। ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর আমরা ছিনিয়ে নিয়েছি আমাদের স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য কে। বিশ্ব সভ্যতা ও বাংলার ইতিহাস সম্পর্কে অনেক কিছুই আমাদের অজানা। দেশের একজন নাগরিক হিসেবে দেশের এই ইতিহাস জানা আমাদের সবার জন্য জরুরী।

তাহলে ইতিহাসের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা বোধ বাড়বে এবং দেশের উৎপত্তি সম্পর্কে এবং আমাদের জীবনের সূচনা সম্পর্কে আমরা জানতে পারব। চলুন জেনে নেই বাংলাদেশের ইতিহাস এবং বিশ্বসভ্যতা সম্পর্কে কিছু কথা।

প্রাচীনকাল থেকে আরম্ভ করে আনুমানিক ষষ্ঠ ও সপ্তম শতকে প্রাচীন বাংলার পুন্দ্র গৌর রায় সূক্ষ্ম তাম্রলিপি বঙ্গ ইত্যাদি জনপদে বিভক্ত ছিল। বাংলার মানচিত্র লক্ষ করলে আমরা এ জনপদগুলোর দেখতে পাবো।
প্রাচীন বাংলার আর্থসামাজিক উন্নয়নে জনপদগুলো রেখে গেছে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।সবগুলো জনপদের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল উন্নত যার ফলে জনপদ গুলোর মধ্যে একদিকে যেমন বাণিজ্যিক সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছিল অন্যদিকে সংস্কৃতির আদান-প্রদান হয়েছিল।

বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা

বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা। বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা ।

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাজনের পর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে নতুন রাষ্ট্র হিসেবে মানচিত্রে স্থান পায়। কিন্তু স্বাধীনতা লাভের পূর্বে প্রাচীন বাংলা ইংরেজদের করায়ত্তে ছিল, ইংরেজদের দখলে।
ওই সময়ে বাংলার জনপদগুলোর বর্তমান মানচিত্র কে অভিহিত করেছেন ভৌগলিক ও অর্থনৈতিক প্রাকৃতিক রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধ এর মাধ্যমে।

প্রাচীন বাংলার জনপদগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী অঞ্চল ছিল বঙ্গ। বাঙালি শব্দের উৎপত্তি হয়েছিল বঙ্গ থেকে।প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন এর দিক দিয়ে পূণ্ড্র ছিল সবচেয়ে সমৃদ্ধ জনপদ। পাথর খোদাই করে হাতে খড়ি সূচনা হয় কোন পূণ্ড্র জনপদ থেকে।
কোন দেশের মানুষের জীবনাচরণ ও ইতিহাসের উপর সে দেশের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য ও প্রভাব অপরিসীম। যার ফলে বিভিন্ন অঞ্চলের জীবন যাপন সংস্কৃতি ও আচার-আচরণ ভিন্ন হয়।

সমতট জনপদ ছিল বর্তমান কুমিল্লার প্রাচীন নাম। কুমিল্লার ময়নামতিতে অনেক প্রাচীন নিদর্শন এর সন্ধান মিলেছে। শালবন বিহার এদের মধ্যে অন্যতম।প্রাচীন জনপদের বিভিন্ন জনপদের ঐতিহ্য সংস্কৃতি আজও বর্তমান বাংলাদেশের লালিত হচ্ছে।

বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা

বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা

প্রাচীন বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাস সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়।ঐতিহাসিক গোল মনে করেন খ্রিস্টপূর্ব দেড় হাজার বছর আগে বাংলার প্রাচীন সভ্যতা গড়ে উঠেছিল অজয় নদীর তীরে। প্রাচীনকালে বাংলা বলতে সমগ্র দেশকে বোঝানো হতো।এর বিভিন্ন অংশ একাধিক নামে পরিচিত ছিল এবং এই অঞ্চলগুলো ভৌগোলিক উপস্থিতি বহুলাংশে নির্ধারিত হয়েছিল।

ভূ প্রকৃতি তথা নদীর স্রোতধারা মাধ্যমে প্রাচীনকালে বাংলার বিভিন্ন জনপদ বিভক্ত ছিল এবং এই জনপদবাসীরা নিজ নিজ জনপদের নামে পরিচিতি লাভ করে।
পালা মন থেকে ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়।তবে গুপ্তদের কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থার অধীনে বাংলা ছিল একটি প্রদেশ।
গুপ্ত শাসনের পর এই দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্ম নেয় এবং এ অবস্থা চলে প্রায় ১০০ বছর ধরে। গোপাল নামে এক নেতা এক অরাজক অবস্থার অবসান ঘটান।
পাল বংশের প্রতিষ্ঠা করেন তিনি এবং এরপর প্রায় ৪০০ বছর পর বাংলার পাল শাসনের অবসান হয় এবং বার শতকের মাঝামাঝি প্রতিষ্ঠিত হয় সেন শাসন।

প্রাচীন যুগে বাংলার বিভিন্ন জনপদ বিভক্ত ছিল এবং এই জনমে নাই নিজ নিজ জনপদের নামে পরিচিতি লাভ করে। তবে ভৌগোলিক পরিবেশ একদিকে যেমন প্রাকৃতিক পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়েছে ঠিক একইভাবে রাজনৈতিক ক্ষমতার বিস্তার বা হ্রাসের মাধ্যমে জনপদগুলোর আয়তন পরিবর্তিত হয়েছে। প্রাচীন বাংলার ইতিহাসের প্রথম পৃথক পৃথক অংশগুলো এককথায় জনপদ নামে পরিচিতি লাভ করেছে।
প্রিয় পাঠকগণ, এ রকমই ছিল বর্তমান বাংলাদেশের উৎপত্তির ইতিহাস। বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমাদের সবার কর্তব্য ইতিহাস জানা এবং অন্যকে জানতে সহায়তা করা।

জানা-অজানা

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সম্পর্কে কিছু তথ্য

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সম্পর্কে কিছু তথ্য

You may also like

Leave a Comment