ব্যাক পেইন শব্দের অর্থ হলো কোমরে ব্যথা। আমাদের দেশে এটি একটি পরিচিত রোগ। যেসব মানুষ অত্যধিক ভারী কাজ করে এবং পরিশ্রমের কাজ করে তাদের কি রোগ বেশি হয়। এটি মূলত কোন রোগ নয় বরং এটি আমাদের একটি স্বাস্থ্যগত সমস্যা। আজকে আমরা জেনে নেব এই ব্যাক পেইন কেন হয় এবং তা থেকে আমরা কিভাবে বাঁচতে পারি ।
মানুষের বয়সের সাথে সাথে হাড় ক্ষয় যায়।ঠিক তেমনি কোমরের হাড় ক্ষয় গেলে সেখানে প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হয়। এসময় মানুষের অধিক ক্লান্তি ভাব এবং দুশ্চিন্তা হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। আমাদের শরীরে পরিমিত দুধ জাতীয় খাবার প্রবেশ না করলে এধরনের কোমরে ব্যথা জনিত সমস্যা হয়। এছাড়া অধিক পরিশ্রমের কারণে আমাদের কোমরের হাড় ক্ষয় যেতে পারে। যারা বেশি ভারী জিনিস ওঠানামার কাজ করেন তাদের কোমরের হাড় ক্ষয় হয়।
এছাড়া যাদের অত্যধিক ওজন তাদেরও ব্যাকপেইন জনিত সমস্যা দেখা যায়। তাদের ব্যাকপেইন ছাড়াও হাঁটুতে ব্যথা বা গিটে গিটে ব্যথা হতে পারে। দুর্ঘটনাজনিত কারণে কখনও কোমরে আঘাত পেলে সেই ব্যথা স্থায়ী রূপ ধারণ করে। কোমরে ব্যথা হওয়ার আরও একটি কারণ হলো শক্ত বিছানায় ঘুমানো। মনে রাখবেন আপনার ঘুমানোর জায়গাটি পর্যাপ্ত নরম এবং আরামদায়ক হতে হবে। আপনি যেখানে ঘুমাবেন সেই স্থানটি পর্যাপ্ত ঘুমান হবে। তোশক ছাড়া বিছানায় ঘুমালে কোমরে ব্যথা হয়। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই এই কোমরে ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করাই যথেষ্ট।
কোমরে ব্যথা থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই আমাদের নিয়ম মাফিক জীবন যাপন করতে হবে। খাদ্যতালিকায় দুধজাতীয় খাবার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।দুধ আমাদের হাড় সুস্থ রাখে এবং মজবুত করে। তাই প্রতিদিন দুধ খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। তবে যারা বেশি বয়স্ক তারা দুধের সাথে পানি মিশিয়ে পাতলা করে খাবেন। ছোটদের উচিত প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ঘন দুধ খেয়ে ঘুমানোর। দুধ খাওয়ার অভাবে অনেকেই ছোটবেলা থেকেই হাড়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়। এজন্য প্রত্যেক বাবা-মায়ের উচিত ছোটবেলা থেকেই তার সন্তানকে দুধ খাওয়ানোর অভ্যাস করা। যাদের কোমরে ব্যথা জনিত সমস্যা আছে তাদের অত্যধিক ভারী কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
- উঁচু সিরি বেশি ওঠানামা করা যাবে না।
- অধিক ভারী বস্তু বহন করা যাবে না।
- ব্যায়াম করার মাধ্যমে কোমরে ব্যথা অনেকটাই কমে যায়।
- প্রতিদিন ব্যায়াম করার অভ্যাস করতে হবে।
- খাবার খাওয়ার কমপক্ষে দুই ঘন্টা পর ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়াম করার সময় কোমর যাতে ব্যবহার হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। দুই হাত কোমরে রেখে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পর্যায়ক্রমে ডানে ও বামে ঢুকতে হবে। সকাল-বিকাল ব্যায়াম করার অভ্যাস করতে হবে।
- এছাড়া সকালে ঘুম থেকে উঠে ঠাণ্ডা পরিবেশে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করতে হবে।
- ওজন বেড়ে গেলে কোমরে ব্যথা হয়। এজন্য ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সঠিক খাদ্য তালিকা মেনে চলতে হবে।ওজন বৃদ্ধি করে এমন কোন খাবার খাওয়া যাবেনা। খাদ্যতালিকায় শাকসবজি ছোট মাছ অর্থাৎ মলা-ঢ্যালা মাছ অন্তর্ভুক্ত রাখতে হবে। শাকসবজি ও ছোট মাছ আমাদের হাড়ের ক্ষয় রোধ করে।
- তেল চর্বি যুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।
কারণ এগুলো আমাদের ওজন বৃদ্ধি করে এবং ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে আমাদের কোমরে ব্যথা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
সর্বোপরি নিয়ম মাফিক জীবন যাপন করার মাধ্যমে কোমরে ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। অধিক প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দুগ্ধজাতীয় খাবার খেতে হবে।এবং সেইসাথে নিয়মিত ব্যায়াম করা অর্থাৎ অঙ্গ সঞ্চালন করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
তবেই কোমরে ব্যথা বা ব্যাকপেইন থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।