প্রযুক্তি আজ যুব সমাজের অবক্ষয়ের কারণ

by Md Limon

বর্ধমান যুগ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগ। কম্পিউটার ,ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ইত্যাদি সবই বিজ্ঞানের অবদান। জীবনকে সহজ সুন্দর ও সাবলীল করতে প্রযুক্তির অবদান অনস্বীকার্য। জানেন এই প্রযুক্তি ও মানব জীবনের ক্ষতির কারণ, এই প্রযুক্তি আজ যুব সমাজের অবক্ষয়ের কারণ। এই প্রযুক্তির কারণে এই অল্প বয়সে ঝরে যাচ্ছে অনেক যুবক-যুবতী। সুস্থতার জন্য আমরা মোবাইল ফোনে গেম খেলে থাকি। পাবজি এবং ফ্রী ফায়ার এর মত কিছু অনলাইন গেম। কয়েক লাখ তরুণ-তরুণী বর্তমানে এই সকল গেমে আসক্ত। তারা তাদের প্রয়োজনীয় সময় এবং টাকা নষ্ট করে শুধুমাত্র গেম খেলার জন্য।

যেসব যুবকের ঠিকমতো পড়াশোনা করা এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করার কথা, তারাই সব কিছু বিসর্জন দিয়ে নিজেদের প্রয়োজনীয় সময় নষ্ট করছে পাবজি এবং ফ্রী ফায়ার এর মত গেম খেলে। তারা মনে করে এটা তাদের স্মার্টনেস। কিন্তু মূলত এ সকল গেম খেলে তারা তাদের প্রয়োজনীয় সময় এবং মস্তিষ্কের ক্ষতি করছে। আপনারা শুনলে অবাক হবেন যে, ফ্রী ফায়ার খেলায় হেরে গিয়ে এক যুবক আত্মহত্যা করেছে। অর্থাৎ তারা পাবজি ফ্রী ফায়ার গেম গুলোকে নিজের জীবনের চেয়েও বেশি দামী মনে করে। অনেক দরিদ্র পরিবারের সন্তান ইন্টারনেট নির্ভর গেম খেলার খরচ জোগাতে বিভিন্ন রকম অসদুপায় অবলম্বন করছে।

এমনকি ক্ষেত্রে টাকা দেবার করতে পারিবারিক কলহ বিবাদ সৃষ্টি হচ্ছে। বাবা মাকে মিথ্যা কথা বলে টাকা নিচ্ছে অনেক সন্তান। কিন্তু তারা নিজেও জানে না এ সকল গেম তাদের জীবনের কত বড় বিপর্যয় এনে দিচ্ছে। পাবজি ফ্রী ফায়ার গেম মানুষের মস্তিষ্কের মানসিক উত্তেজনা বৃদ্ধি করে।অনেক সময় গেম খেলতে গিয়ে উত্তেজিত হয়ে ব্রেইন স্ট্রোক এর মতে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। প্রযুক্তির এ ভয়াবহ দিকটি সম্পর্কে বেশিরভাগ মানুষই অন্ধ।তরুণ-তরুণীরা তাদের প্রয়োজনীয় সময় বিসর্জন দিচ্ছে। তাদের পড়াশোনার হার কমে গেছে এবং বেকারত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ যে সময়ে একজন তরুণের চাকরির পেছনে দৌড়ানোর কথা, তখনই সেই তরুণ ফ্রি ফায়ার গেমে আসক্ত। পৃথিবীতে কোটি কোটি বেকার তরুণদের বেকারত্বের কারণ হলো এই সকল গেম। মূলত পৃথিবীর বুকে বোঝা। কারণ তারা উৎপাদনশীল খাতে নিজেদের পরিশ্রম ব্যয় করছে না।বরং অর্থের অপচয় করে তারা নিজেদের ক্ষতি করছে এবং সেইসাথে দেশের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।

গেম খেলার কারণে তাদের মস্তিষ্ক বিকৃত হয়ে যাচ্ছে, মানবিক মূল্যবোধ, ধর্মীয় আচার ব্যবহার তারা ভুলে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে ভালোবাসা স্নেহ মায়া মমতা ইত্যাদি লোপ পাচ্ছে। মূলত তারা ধীরে ধীরে যান্ত্রিক মানুষে পরিণত হচ্ছে। গেম খেলার কারণে তারা ধীরে ধীরে অনুভূতিহীন হয়ে যাচ্ছে। বড়দের সম্মান করার প্রবণতা কমে যাচ্ছে এবং অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। এসকল গেম মূলত উদ্ভাবিত হয়েছিল কিছুটা একঘেয়েমি কাটানোর জন্য। মানুষের ব্যস্ত জীবনের মাঝে একটু বিনোদন দেওয়ার জন্য, এসকল গেম এর উদ্ভব হয়েছিল।

অপব্যবহার করছে বিশেষ করে বর্তমান যুবসমাজ। তাদের অবক্ষয়ের মূল কারনই হল যে সকল গেম। বলাবাহুল্য এই সকল গেম এর কারণে তাদের অন্ধকার ভবিষ্যৎ এগিয়ে আসছে। তারা ধীরে ধীরে প্রযুক্তির অন্ধকার গুহার মধ্যে ধাবিত হচ্ছে। বিবেক বুদ্ধিহীন যান্ত্রিক মানুষে পরিণত হচ্ছে। সর্বোপরি প্রযুক্তি আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় সমস্যা ও বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার সমাধান করা খুবই শক্ত, কারন প্রতিটা মানুষের জীবন তার নিজস্ব মতামতেই চলে। এটা সমাধান করার জন্য গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসতে হবে।বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা,পোস্টার, টিভি প্রোগ্রাম,মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে। প্রকৃতপক্ষে তরুণ-তরুণীদের ভালোবেসে বুঝাতে হবে। তাহলে তারা প্রযুক্তির ক্ষতিকর দিকটি উপলব্ধি করবে এবংপাবজি ফ্রী ফায়ার এর মত ক্ষতিকর গেম থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখবে।

You may also like

Leave a Comment