ভালো করে রাতে ঘুমাতে চান?কীভাবে তৈরি হবেন বিছানার জন্য?
ঘুম মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাবশ্যকীয় একটি উপাদান। মানুষের দৈহিক বৃদ্ধি , বিকাশের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। আসলে ঘুমের সময় আমাদের দৈহিক বৃদ্ধি ঘটে থাকে। মৌল বিপাকীয় কাজ ঘুমের সময় ঘটে ।
মানুষের রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম দরকার। আমরা অনেকেই রাতে ভাল ঘুম না হওয়া নিয়ে চিন্তিত। দুশ্চিন্তা বা অন্যান্য কারণে আমাদের অনেকেরই রাতে ভালো ঘুম হয় না। আবার অনেক সময় দিনে অতিরিক্ত ঘুমানোর কারণে রাতে ঘুম আসে না।আজকে আমরা জেনে নেবো রাতে ভালো ঘুমানোর কিছু উপায়।
সবার আগে যেটা নিশ্চিত করতে হবে, তা হল ঘুমানোর জন্য একটি সুন্দর ও মনোরম পরিবেশ। ঘুমানোর ঘরটি অবশ্যই নিরিবিলি ও দূষণ মুক্ত হতে হবে। ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশ করতে হবে সারাদিন।
তবে ঘুমানোর সময় লাইট অবশ্যই বন্ধ রাখতে হবে। অনেক সময়ে ঘুমানোর চেষ্টা করেও চোখে বেশি আলো লাগার কারণে ঘুম আসেনা। জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘরে আলো নিভানো দরকার।
ঘুমানোর পূর্বে ১০ মিনিট ব্যায়াম করে নেয়া ভালো। ব্যায়াম করলে শরীর কিছুটা ক্লান্ত হয় এবং ঘুম ভালো হয়। ব্যায়াম করলে শরীরের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। বিপাকীয় হার ত্বরান্বিত হয় এবং ঘুম ভালো হয়।
ঘুমানোর ঘরটি দূষণ মুক্ত হতে হবে। ঘরে কোনরকম কোলাহল বা শব্দদূষণ হলে ভালো ঘুম হবে না। এজন্য ঘুমানোর জন্য একটি নিরিবিলি পরিবেশে নির্বাচন করতে হবে। সেই সাথে ঘুমানোর স্থানটি হতে হবে পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যসম্মত।
ভালো করে রাতে ঘুমাতে চান?কীভাবে তৈরি হবেন বিছানার জন্য?
দিনে অতিরিক্ত ঘুমানো যাবে না। দিনে যদি খুব বেশি ঘুমানো যায় তাহলে রাতে ঘুম আসে না। গড়ে একজন সুস্থ মানুষের দৈনিক 6 থেকে 7 ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে এর থেকে বেশি সময় ঘুম প্রয়োজন।
যদি দিনে খুব বেশি ঘুমানো যায় তাহলে মানুষের শরীর কম ক্লান্ত হয়।দিন শেষে একটি আরামদায়ক ঘুমের জন্য প্রয়োজন কিছুটা ক্লান্ত শরীর। আর তাই দিনে অল্প সময়ে ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে।
এছাড়া দিনে অতিরিক্ত ঘুমালে তার শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।রাতে ভালো ঘুম হওয়ার আরো একটি ভালো উপায় হচ্ছে প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটাহাঁটি খেলাধুলা ও ব্যায়াম।প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় যাবত হাঁটাহাঁটি ও ব্যায়াম করতে হবে।
ব্যায়াম করলে শরীরের সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গের একটি সুষ্ঠু চালনা হয়। রক্ত সঞ্চালন ও হৃদপিন্ডের কাজ সমন্বয় সাধিত হয়। এতে শরীর সুস্থ থাকে। ব্যায়াম করলে শরীর কিছুটা ক্লান্ত হয়। রাতে ভালো ঘুমানোর জন্য ব্যায়াম করা জরুরি।
রাতে ঘুমানোর জন্য খাদ্য তালিকায় স্বাস্থ্যসম্মত খাবার যোগ করতে হবে। তবে শাক জাতীয় খাবার রাতে না খাওয়াই ভালো।কারণ আমাদের পাকস্থলী শাক হজম করতে অতিরিক্ত শক্তি খরচ করে। রাতের বেলা শাক খেলে পাকস্থলীর জন্য তা হজম করা কঠিন হয়ে পড়ে। এজন্য রাতের হালকা খাবার বিশেষ করে ডাল ও মাছ জাতীয় খাবার খাওয়া ভালো। এতে হজম শক্তির ঠিক থাকে এবং ঘুম ভালো হয়।
এছাড়া অনেক সময় দেখা যায় দুশ্চিন্তা ও হতাশা জনিত কারণে রাতে ঘুম হয় না। আর্থিক কারণ বা পেশাগত কারণে মানুষ বেশিরভাগ সময় চিন্তিত থাকতে পারে । এই চিন্তার প্রভাব পড়ে রাতের ঘুমে। চিন্তা গ্রস্ত থাকার কারণে রাতে ঘুম হয় না। ভালো ঘুমাতে চাইলে অবশ্যই দুশ্চিন্তা পরিহার করতে হবে।
ভালো করে রাতে ঘুমাতে চান?কীভাবে তৈরি হবেন বিছানার জন্য?
সব সময় হাসিখুশি ও আনন্দময় জীবন যাপন করার চেষ্টা করতে হবে।মন ভালো রাখার ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে কোথাও ঘুরে আসা যায়। এছাড়া টিভিতে নানারকম বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান হয়, সেগুলো উপভোগ করলে মন ভাল থাকে দুশ্চিন্তা থেকে বাচা যায় এবং রাতের ঘুম আরামদায়ক হয়।
রাতে ঘুমানোর সময় কয়েল বা এরোসল জাতীয় দ্রব্যাদি পরিহার করতে হবে। এসব দ্রব্য মশা দূর করলেও এগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কারণ এসব দ্রব্যে নানারকম রাসায়নিক উপাদান মিশ্রিত থাকে। ভালো ঘুমের জন্য আমাদের উচিত মশারি টানানো। মশারি একটি অতি আরামদায়ক ব্যবস্থা।
অনেকেই কোয়েল বা এরোসল ব্যবহার করে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভোগেন এবং রাতে ভালো ঘুমাতে পারেন না। তাদের জন্য সর্বোত্তম উপায় হল মশারি ব্যবহার করা।
সর্বোপরি সুস্থ সুন্দর ও হাসিখুশি ময় জীবন যাপন করার চেষ্টা করতে হবে।খাদ্যতালিকায় অতিরিক্ত চর্বি বা ফ্যাট জাতীয় খাবার অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না।স্বাস্থ্যসম্মত খাবার বিশেষ করে শাকসবজি ডাল মাছ এসব খাবার খেতে হবে,নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে তবে রাতে একটি আরামদায়ক ও ভালো ঘুম নিশ্চিত হবে।
রাখার জন্য একটি ভাল ঘুম অতি প্রয়োজনীয়। কারণ সারাদিনের কর্মশক্তি নির্ভর করে রাতের ঘুমের উপর। তাই এ ব্যাপারে আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
মেয়েদের তলপেটের ব্যথা কেন হয় এবং কী করবেন