ইসলাম হলো শান্তির ধর্ম। আমাদের জন্য মনোনীত দ্বীন বা জীবন ব্যবস্থা হল ইসলাম।মুসলিম বাবা মায়ের একমাত্র কর্তব্যই হলে তাদের শিশুকে সঠিকভাবে ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত করা। মূলত ইসলামিক জ্ঞান ই ইহকাল ও পরকালের জন্য অবশ্য প্রয়োজনীয়। শিশুদের মন হল কাদার মত নরম। অর্থাৎ ছোটবেলা থেকে তাদের মন যেভাবে গড়া হবে, বড় হয়ে তারই প্রতিফলন ঘটবে। ছোটবেলা থেকেই যদি একটি শিশুর মন ইসলামী ও নীতি শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করা যায় তাহলে তার সমগ্র জীবন হবে জ্ঞানের আদর্শ প্রতিফলন।
ছোটবেলা থেকেই যদি একটি শিশুকে নামাজ পড়তে উদ্বুদ্ধ করা যায়, তাহলে তার মধ্যে আল্লাহর প্রতি দাসত্ব ও খোদাভীতি বাড়বে।সে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করবে।সেই সাথে নিয়মিত অঙ্গ সঞ্চালন এর মাধ্যমে তার শরীর সুস্থ ও রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। ফলে সে ভবিষ্যতের জন্য একজন সুস্থ-সবল ও শিক্ষিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে। নামাজ ছাড়া ইমান পরিপূর্ণ হয় না।
আমাদের সকলের উচিত ছোটবেলা থেকে একটি শিশুকে রোজা পালন করা শেখানো। একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর শিশুরা রোজা পালন করতে উপযুক্ত হয়। সঠিক বয়সে পৌছার পরে বাবা-মায়ের উচিত শিশুকে রোজা পালনে শিক্ষা দেওয়া। সারা বছরের মধ্যে একটি মাস রোজা পালন করলে শরীর সুস্থ থাকে ।
শরীরের অভ্যন্তরীণ খারাপ রোগের জীবাণু গুলো দূরীভূত হয়।রোজা পালনের মাধ্যমে মহান আল্লাহর প্রতি বান্দার চরম তাকওয়া প্রকাশ পায়।সাওম পালনকারীর এর পুরস্কার মহান আল্লাহ তায়ালা নিজেই দিবেন।তাই আমাদের শিশুদের ছোটবেলা থেকেই রোজা পালনের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
ইসলামী শিক্ষার মাধ্যমে শিশুরা বন্ধুত্ব সহমর্মিতা আত্মীয়তা ও ভালোবাসার সম্পর্ক শিক্ষা পায়। ইসলাম কোন বর্ণ বা জাতি বৈষম্য অনুমোদন করে না। ইসলামের চোখে ধনী-গরীব, ফর্সা কালো, এবং সকল পেশার মানুষ সমান।
মানুষের মানুষের দ্বন্দ্বের সম্পর্ক ইসলাম সমর্থন করে না। বরং ইসলাম হলো শান্তির ধর্ম ভালোবাসার ধর্ম। একটি শিশু ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত হলে তারমন অবশ্যই দরিদ্রদের প্রতি সহানুভূতিশীল থাকবে।সে দান-খয়রাত ও অন্যান্য সহযোগীতা মূলক কর্মকান্ডে নিজেকে নিয়োজিত রাখবে।
এর প্রকৃত উদাহরণ হল যাকাত। যাকাত দান এর মাধ্যমে একজন মানুষের মন কৃপণতা থেকে মুক্তি পায়। ধনীদের সম্পদে দরিদ্রদের অধিকার আছে যাকাত তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ।দরিদ্ররা যাতে সহজেই তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারে,সেজন্য ধনীদের উচিত তাদের প্রতি রিক্ত সম্পদ থেকে কিছু অংশ দরিদ্রকে দান করা।
এতে বাকি সম্পদ ধনীদের জন্য হালাল হয়ে যায়। যাকাত দরিদ্রদের প্রতি ধনীদের কোন অনুগ্রহ নয়, বরং এটি মহান আল্লাহ প্রদত্ত দরিদ্রদের অধিকার। তাই ছোটবেলা থেকেই আপনার শিশুকে দান-খয়রাতের উদ্বুদ্ধ করবেন।
ইসলাম আমাদের কে শেখায় কিভাবে বড়দের সম্মান ও ছোটদের স্নেহ করতে হয়। বাবা-মা বড় ভাই বোন ও বয়জেষ্ঠ সহ সবাইকে সম্মান করা উচিত। কেবলমাত্র ইসলামী শিক্ষার মাধ্যমেই এটা সম্ভব।
প্রাতিষ্ঠানিক জীবন থেকেই শিশুদেরকে ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। এতে তারা সবার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলবে। দরিদ্রের প্রতি দয়াময় হবে।বড়দেরকে সম্মান করা শিখবে শিশুরা যদি তাদেরকে ইসলামী শিক্ষা দেয়া হয়।
সেই সাথে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া শিখবে, রোজা পালন করা শিখবে।
পরবর্তীতে তারা কর্মজীবনে প্রবেশ করলে, দেশের জন্য এক একটি সম্পদে পরিণত হবে। তাদের মধ্যে সব প্রকার নৈতিক মূল্যবোধ বিদ্যমান থাকবে। দেশের সকল দরিদ্র মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকবে।সর্বোপরি ইহকালীন ও পরকালীন জীবনের জন্য তারা কল্যাণ বয়ে আনবে।তাই আমাদের উচিত শিশুদেরকে ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত করা এবং শান্তিপূর্ণ জীবন গড়া।