১০ টি ক্ষুদ্র ও ব্যবসার তালিকা
মানুষ নিজেকে স্বাবলম্বী করতে নানা রকম পথ বেছে নেয়। এর মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত ও জনপ্রিয় উপায় হলো ব্যবসা করা। ১০ টি ক্ষুদ্র ও ব্যবসার তালিকা, ব্যবসা করে আজ আমাদের দেশের বহু নারী পুরুষ নিজেকে স্বাবলম্বী করেছে। বেকারত্বের অভিশাপ থেকে বহু মানুষ নিজেকে মুগ্ধ করেছে ব্যবসার মাধ্যমে।ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ব্যবসা একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। কুটির শিল্পের সামগ্রীগুলো সাধারণত মানুষ নিজের হাতে তৈরি করে এবং ভালো মূল্যে বিক্রি করে।
হাতে তৈরি জিনিস গুলো দেখতে অত্যন্ত চমকপ্রদ ও আকর্ষণীয় হয়।
আমাদের দেশের সম্ভাবনাময় কিছু ক্ষুদ্র ব্যবসা রয়েছে।এগুলো সম্পর্কে জানতে আমাদের দেশের বেকার জনগোষ্ঠীর নিজেদেরকে স্বাবলম্বী করতে কিছুটা সাহায্য পাবে।
আজকে আমরা জেনে নেব বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় দশটি ক্ষুদ্র ব্যবসার তালিকা!
১. ক্ষুদ্র ব্যবসার ক্ষেত্রে মাটির তৈরি হাড়ি পাতিল, সানকি, কলস, মাটির পুতুল ইত্যাদি তৈরি করে বিক্রি করা একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এসব কাজ আমাদের দেশের কুমোর সম্প্রদায়ের মানুষ করে থাকে। এই কাজ করে তারা নানারকম মেলা এবং উৎসব অনুষ্ঠান ও পূজা পার্বণের প্রচুর অর্থ আয় করে।
২. ক্ষুদ্র ব্যবসার মধ্যে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় ব্যবসা হলো খাবারের ব্যবসা। খাবারের এই ব্যবসায় দুইভাবে করা যায়। প্রথমত কোন দোকানে মুখরোচক খাদ্য সামগ্রী বিক্রয় করা। এছাড়া আরো একটি উপায় হলো অনলাইনে বিক্রি। অনেক মানুষ অনলাইনে খাবার অর্ডার করে থাকে। এক্ষেত্রে খাবার সার্ভিস দিয়ে একজন মানুষ অর্থ আয় করতে পারে। এটি ১০ টি ক্ষুদ্র ও ব্যবসার তালিকা এর মধ্যে অন্যতম ।
৩. হোটেল ও রেস্তোরাঁ এর মাধ্যমে ক্ষুদ্র থেকে বৃহত্তর ব্যবসা করা যায়। বহু মানুষ চাকরির জন্য বাইরে কাজ করে। তাদের দৈনন্দিন খাদ্য চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে সবসময় বাড়ির খাবার খাওয়া সম্ভব হয় না। অনেক সময় মানুষকে বাইরের হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাবার খেয়ে ক্ষুধা মেটাতে হয়। এক্ষেত্রে বহু মানুষকে খাদ্য সার্ভিস দেয়া যায়। এক্ষেত্রে একজন ব্যবসায়ী অনেক টাকা আয় করতে পারবেন। এটি ১০ টি ক্ষুদ্র ও ব্যবসার তালিকা এর মধ্যে বিশেষ অবস্থানে রয়েছে ।
৪. বাঁশ ও বেতের তৈরি সামগ্রী তৈরি করে বিক্রি করা যায়। বেতের তৈরি চেয়ার টেবিল সোফা মোরা এবং অন্যান্য আকর্ষণীয় দ্রব্য তৈরি করে তা মানুষের কাছে উপস্থাপন করা যায়।এছাড়া কোন একটি দ্রব্য তৈরি করে তার ছবি তুলে ইন্টারনেটের বিভিন্ন সাইটে পোস্ট করা যায়। এতে করে একজন মানুষ দ্রব্যটির দামসহ দেখে তা পছন্দ করতে পারেন এবং যোগাযোগের মাধ্যমে তা কিনতে পারেন। ক্ষুদ্র ব্যবসার ক্ষেত্রে এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৫. এছাড়া নিজের উদ্যোগে কাপড় কিনে তা দিয়ে জামাকাপড় , বোরখার শার্ট ব্যান্ড ইত্যাদি তৈরি করে বাজারজাত করা যায়।বাংলাদেশ গার্মেন্টস শিল্পের প্রচুর জনপ্রিয়তা রয়েছে।তবে একজন মানুষ গার্মেন্টসে কাজ না করেও নিজের উদ্যোগে জামা কাপড় তৈরি করে তা বিক্রয় করতে পারেন। এটি স্বাবলম্বী হওয়ার একটি ভালো কৌশল।
৬. ক্ষুদ্র ব্যবসার ক্ষেত্রে একটি প্রভাব পূর্ণ ব্যবসা হল দৈনন্দিন ডাল চাল আটা ময়দা ইত্যাদির ব্যবসা করা।দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুলো মানুষের সব সময় প্রয়োজন হয়। তাই এগুলো বিক্রয়ের হাড় থাকে অত্যন্ত বেশি। এ ধরনের ব্যবসা করে লাভবান হওয়া যায়। এই ১০ টি ক্ষুদ্র ও ব্যবসার তালিকা এর মধ্যে এটি অনেক বড় ভুমিকা পালোন করে ।
৭. ক্ষুদ্র ব্যবসার মধ্যে আরো একটি ব্যবসা হলো ফলের ব্যবসা। একজন মানুষ নিজের বাড়ির আঙিনায় ফলের গাছ রোপন করতে পারে।সেই গাছে ফল ধরলে উপযুক্ত যত্ন দিয়ে ফল কে বাজারজাত করা যায়।ফল চাষ করা অত্যন্ত সহজ এবং শুধুমাত্র একটু অপেক্ষা করলেই ফল বড় হয়।
তাই বাড়ির সামনের খোলা জায়গা বা একটি ভালো জায়গায় ফলের গাছ লাগিয়ে একজন মানুষ ফল চাষে লাভবান হতে পারে। প্রচুর দামের আমাদের দেশের বাজারগুলোতে ফল বিক্রি হয়। তাই ফল চাষ অত্যন্ত লাভজনক।
৮. এছাড়া ফুলের চাষ করে ও একজন মানুষ অনেক টাকা আয় করতে পারে। আমাদের দেশের বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠানে ফুলের প্রয়োজন হয় । উৎসব অনুষ্ঠান পালা-পার্বণ এবং বিয়েতে জনপ্রিয় একটি উপাদান হল ফুল। ফুল ছাড়া কোন উৎসবে যেন পরিপূর্ণ হয় না।এজন্য মানুষের মধ্যে কেনার প্রবণতা অনেক বেশি থাকে ফুল। এটি বাড়ির আঙিনায় চাষ করে একজন মানুষ সযত্নে বাজারজাত করতে পারেন।
৯. ক্ষুদ্র ব্যবসার মধ্যে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা হল মাছের চাষ। মাছ আমাদের দৈনন্দিন পুষ্টির চাহিদা মেটায়। এমন কোনো মানুষ নেই যে মাছ ক্রয় করে না। এজন্য মাছের চাষ জীবনে আর্থিক সফলতা এনে দিতে পারে। ক্ষুদ্র পরিসরে মাছ চাষ করে একজন মানুষ সফল ব্যবসায়ী হতে পারেন।
১০. ক্ষুদ্র ব্যবসার মধ্যে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ব্যবসা হল ইন্টারনেটের বিভিন্ন সাইটে পণ্যদ্রব্যের ব্যবসা করা। বর্তমানে আমাদের দেশের বেকার এবং চাকুরীজীবী সবাই ইন্টারনেটে অনেক সময় ব্যয় করে। সুতরাং তাদের কাছে কোন পণ্যের বিবরণ এবং বিস্তারিত দেখাতে পারলে পণ্যের প্রতি তাদের আকৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।ফলে ইন্টারনেটে তারা পণ্যটি অর্ডার করেন এবং ডেলিভারি চার্জ দিয়ে জিনিসটি গ্রহণ করেন।তাই মানুষের দ্বারে দ্বারে পণ্যদ্রব্য পৌঁছে দেয়ার কাজ করে একজন মানুষ সফল ব্যবসায়ী হতে পারেন। খুব কম পরিশ্রম করে ইন্টারনেটে কিছু সময় দিয়ে একজন মানুষ ক্ষুদ্র পরিসরে তার ব্যবসার কাজ শুরু করতে পারেন।
এভাবেই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিসরে মানুষ তাদের ব্যবসাকে প্রসারিত করতে পারে। মূলত কাজ করার আগ্রহ এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে।অবশ্যই ক্ষুদ্র পরিসরে ব্যবসা করার ইচ্ছা শক্তি থাকতে হবে এবং কাজ করার ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। তবেই একটি ক্ষুদ্র ব্যবসায় মানুষ সফল হতে পারবে।