গ্যাস্ট্রিক হলো পাকস্থলীর এক অস্বস্তিকর এবং অস্বাভাবিক অবস্থা।
পাকস্থলীর প্রাচীর যখন অতিরিক্ত পরিমাণে হাইড্রোক্লোরিক এসিড ক্ষরণ করে তখন এরূপ অবস্থার সৃষ্টি হয়। অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ অথবা খাদ্যের অনিয়মের কারণে গ্যাস্ট্রিক হয়ে থাকে।
কিছুক্ষণ দেখে গ্যাস্ট্রিক এর উপস্থিতি টের পাওয়া যায়।
আমরা জেনে নেবো গ্যাস্ট্রিক এর কিছু লক্ষণ।
১. গ্যাস্ট্রিকের একটি লক্ষণ হলো বুকে জ্বালা করা। আমরা অনেক সময় বাইরে বিভিন্ন খাবার যেমন সিংগারা পুরি পিজা বার্গার চটপটি ফুচকা ঝাল মুড়ি জাতীয় খাবার খেয়ে থাকি ।
এসব খাবার অত্যন্ত সুস্বাদু এবং মুখরোচক।
তবে আমরা ভুলে যাই যে সকল খাবার বাইরের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বানানো হয়। এবং সেইসাথে এসব খাবারে তেলের প্রাধান্য থাকে বেশি।আর এসব খাবার অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে গ্যাস্ট্রিক হয় তাকে। গ্যাস্ট্রিক হলে বুকে এক অস্বস্তিকর অবস্থার অনুভূত হয়।
বুকের ভিতর গরম অনুভূত হয় এবং ভেতরের খাবার গলা দিয়ে বের হয়ে আসছে বলে মনে হয়।
বুকে একঘেয়ে ব্যথা অনুভূত হয়। বুকে এমন বারবার ব্যথা হতে থাকলে একসময় গ্যাস্ট্রিক আলসার সৃষ্টি হয়।
২. গ্যাস্ট্রিকের আরো একটি লক্ষণ হলো পেটে ব্যথা। গ্যাস্ট্রিক হলে পেটে অত্যন্ত ব্যথা অনুভূত হয়। তবে এই ব্যথা কখনো তলপেটে ছড়ায় না। বড় গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা নাভির উপরের দিকের হয়ে থাকে।
কখনও একটি নির্দিষ্ট স্থানে ব্যথা অনুভূত হয় আবার কখনো এই ব্যথা ছড়িয়ে যায়।
৩. গ্যাস্টিকের আরো একটি লক্ষণ হলো দুর্গন্ধযুক্ত ঢেকুর ওঠা।
অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিক হলে আপনার এক ধরনের ঢেকুর উঠলে যা মূলত হাইড্রোক্লোরিক এসিডের আভা।
অতিরিক্ত হাইড্রোক্লোরিক এসিড পাকস্থলীতে ক্ষরণ হলে সেখানকার বাষ্প অনেক সময় ঢেকুর হিসেবে উপরে উঠে আসে। একে অনেকে টক ঢেকুর বলে থাকে। এটিও একটি অস্বস্তিকর এবং কষ্টদায়ক অবস্থা।
৪. গ্যাস্ট্রিক হলে অনেক সময় পিঠে ব্যথা অনুভূত হয়। আমরা অনেকেই এই লক্ষণটি অবহেলা করে যাই । কিন্তু এটি গ্যাস্টিকের একটি অন্যতম লক্ষণ।
অনেক সময় খেয়াল করবেন আপনার পিঠের একটি নির্দিষ্ট স্থানে একঘেয়ে ব্যথা অনুভূত হচ্ছে।
এই লক্ষণ অবহেলা করবেন না বরং এটি গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ।
৫. গ্যাস্ট্রিক হলে অনেক সময় বুকে চাপ অনুভূত হয়। আপনার মনে হতে পারে অনেক ভারী কোনো জিনিস আপনার বুকের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।
এটি মূলত এসিডের চাপ।
৬. ক্ষুধা বন্ধ হওয়া গ্যাস্ট্রিকের আরো একটি লক্ষণ। আপনার যদি গ্যাস্ট্রিক সমস্যা হয় তাহলে আপনার সহজে ক্ষুধা লাগবে না।
সব সময় মনে হবে আপনি অনেক খাবার খেয়েছেন এবং পেট ভরা অনুভূত হবে। এমন অবস্থায় আর কিছু না খাওয়াই ভালো।
৭. গ্যাস্ট্রিক হলে গলা জ্বালা করতে পারে।অনেক সময় গলায় জ্বালা করলে আমরা ভাবি হয়তো ঝাল খাবার খাওয়ার কারণে এমন হচ্ছে। আসলে একই গ্যাস্ট্রিকের একটি লক্ষণ।
৮. মুখের মধ্যে টক ভাব একটি গ্যাস্ট্রিকের আরো একটি লক্ষণ। এটি হলে বমি বমি অনুভূত হয়।অতিরিক্ত এসিডিটি হলে আপনার বমি হয়ে যেতে পারে।
তবে বমি হলে এসিডিটি অনেকটা কমে যায়।
প্রিয় পাঠক, আপনারা জানলেন গ্যাস্ট্রিক হওয়ার লক্ষণ গুলো।
তাহলে এরকম কোন লক্ষণ দেখলে অবহেলা না করে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন এবং গ্যাস্ট্রিক মোকাবেলায় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।