আঁকাবাঁকা দাঁত সোজা করার ঘরোয়া পদ্ধতি
সুন্দর চেহারা কার না ভালো লাগে! সবার নজর কাড়ে একটি সুন্দর চেহারা।
আর চেহারা সুন্দর করতে দেহের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সমানভাবে ভূমিকা রাখে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে মানুষের সৌন্দর্য ধরার ক্ষেত্রে মুখ মন্ডল এর সৌন্দর্য সবার আগে বিচার করা হয়। অনেক সময় হাত পায়ের রং কালো হলেও আমার ফর্সা হওয়ার কারণে একজন মানুষকে সুন্দর বলে বিবেচনা করা হয়। মুখের সৌন্দর্য একজন মানুষের সুন্দর চেহারাকে তুলে ধরে ।
অনেক সময় দেখা যায় একজন মানুষের হাত পা কালো অথচ মুখ ফর্সা হওয়ার কারণে তাকে সুন্দর বলে বিবেচনা করা হয়। অর্থাৎ মৌখিক সৌন্দর্যটাই মানুষের চেহারা কে তুলে ধরে।
আর মুখের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো দাঁত।
মুখের সৌন্দর্যের জন্য দাঁত সুন্দর ও সোজা হওয়ার অতি জরুরী।
আমাদের অনেকেরই দাঁত নিয়ে অনেক রকম সমস্যা রয়েছে। যেমন অনেকের দাঁত আঁকাবাঁকা, অনেকের দাঁত হলদে, অনিকের দাঁত আবার অকালেই কালো হয়ে যায়।
চেহারা সুন্দর করতে দাঁত সুন্দর ও সোজা রাখা অতীব জরুরী।
অন্যান্য কাজে ও মজবুত ও সুন্দর দাঁত প্রয়োজনীয়।
এজন্য দাঁত সুন্দর করার ব্যাপারে আমাদের সচেতন হতে হবে। আমরা অনেকেই দাঁত নিয়ে নানারকম দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগি। অনেকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেও ভালো ফল পাইনা। প্রচুর অর্থ ব্যয় করে নানা রকম অপারেশন করিয়ে ও অনেক সময় সুন্দর দাঁত পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। ডাক্তারের পরামর্শমতো নানারকম এলোপ্যাথিক ওষুধ খাওয়ার কারণে অনেক সময় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। চুল পড়ে যাওয়া, মোটা হওয়া, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, স্নায়ু দুর্বলতা ইত্যাদি সহ অনেক রকম সমস্যা দেখা যায় নানা রকম এলোপ্যাথিক ঔষধ খাওয়ার কারণে। অনেকে অকালে বুড়িয়ে যায় দাঁতের অপারেশন করার কারণে। দাঁত এর স্নায়ু সরাসরি মস্তিষ্কের সাথে যুক্ত। এজন্য দাঁতের উপর কোন খারাপ প্রভাব পড়লে আমাদের মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়। অর্থাৎ আমাদের দাঁত চিকিৎসার ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। সেইসাথে আঁকাবাঁকা দাঁত সোজা করার ক্ষেত্রে ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। যে কোন চিকিৎসায় ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পূর্ণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত। ঘরোয়া পদ্ধতিতে অতি সহজেই শ্রদ্ধা ও সাদা ধবধবে দাঁত পাওয়া সম্ভব ।
আঁকাবাঁকা দাঁত সোজা করতে যে সকল ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে তা হল
১. প্রথমত শিশুদের দুধের দাঁত যথাসময়ে ফেলতে হবে।অনেক সময় দেখা যায় দাঁত নড়ার পরেও অনেক শিশু ভয়ে আতঙ্কে কাউকে বলতে চায় না। যথাসময়ে শিশুদের দাঁত তোলা সম্ভব হয় না। ওই সময়ে নতুন দাঁত গজানোর জায়গা পায়না। ফলে পেছনদিক অথবা সামনের দিক থেকে নতুন দাঁত গজায়। যথাস্থানে দাঁত গজানোর সুযোগ পায় না। এতে দাঁত আঁকাবাঁকা হয়। কি জন্য বাবা-মাকে সচেতন হতে হবে যেন ঠিক সময়ে শিশুর দুধের দাঁত তুলে ফেলা হয়। দুধের দাঁত ফেলার ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া অপেক্ষা ঘরোয়া ভাবে দাঁত তুলে ফেলাই ভালো।
২. শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাবার খুব সহজেই দাতে আটকে যায়। খাবার আটকে যাওয়ার কারণে অনেক সময় দাঁত যথাস্থান থেকে সরে যেতে পারে। কারণ দীর্ঘদিন দাঁতের ফাঁকে কোন খাবার বা দ্রব্যের উপস্থিতি দাঁতকে নির্দিষ্ট স্থান থেকে সরিয়ে দিতে পারে। এজন্য চর্বি জাতীয় খাবার অথবা এমন কোন খাবার যা সহজে পরিষ্কার করা যায় না এমন খাবার খাওয়ার পর সাথে সাথে দাঁত ব্রাশ করতে হবে।
৩. একটি সাদা কাপড়ে একখণ্ড বরফ নিয়ে তার দাঁতের চারপাশে ভালোভাবে মালিশ করতে হবে।
আঁকাবাঁকা দাঁতের চারপাশে বরফখন্ডের মালিশের কারণে দাঁত সতেজ থাকে।
৪. অনেক সময় আমাদের দাঁতের কোন অংশ ভেঙে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে বাকি অংশ তুলে ফেলা ভালো।আটকে অনেক সময় ঘা এমনকি ক্যান্সার হতে পারে।
৫. ভাবে দাঁতের কোন জটিলতা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
৬. প্রতিদিন নিয়মিত দুইবার ব্রাশ করতে হবে।এবং প্রতিবার খাওয়ার পরে হাত দিয়ে দাঁতের চারপাশ ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে।
৭. আঁকাবাঁকা দাঁত সোজা করার একটা প্রাকৃতিক উপায় হলো জিহবা। জিব্বা দিয়ে ঠেলে অনেক সময় বাঁকা দাঁত সোজা করা যায়।
ধীরে ধীরে ধাক্কা অথবা টান প্রয়োগের মাধ্যমে বাঁকা দাঁত কে যথাস্থানে আনা সম্ভব। এক্ষেত্রে বুদ্ধিমত্তার সাথে দাঁতকে যথাস্থানে আনার নিয়মিত চেষ্টা করতে হবে। সেটি একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
৬. দাঁত সুন্দর রাখার একটি ঘরোয়া উপায় হল লেবু দিয়ে দাঁত ঘষে ফেলা। লেবুতে থাকে সাইট্রিক এসিড। এটি আমাদের দাঁত পরিষ্কার রাখতে এবং গোড়া মজবুত রাখতে সহায়তা করে।
৭. এছাড়া নিমের ডাল দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করলে দাঁত সাদা ও জীবাণুমুক্ত থাকে। নিমের ডাল প্রাকৃতিক ব্রাশ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
৮. দাঁত ভালো রাখার জন্য দুগ্ধজাত খাবার পরিহার করা উচিত।
অর্থাৎ আঁকাবাঁকা দাঁত সোজা করতে ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করাই ভালো। এতে কোনো রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই সোজা সুন্দর ও সাদা দাঁত পাওয়া যায়।
মানুষের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে দাঁত অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেজন্য আমাদের সচেতন হতে হবে আঁকাবাঁকা দাঁত সোজা করার ব্যাপারে।
নিজে সচেতন হওয়া এবং সেইসাথে ছোট শিশুদের দাঁতের যত্ন নিতে হবে । দাঁত যাতে পুষ্টির অভাবে ভঙ্গুর হয়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সবজি মাছ মাংস লেবু টমেটো ইত্যাদি খেতে হবে। এবং দাতে কোনরূপ সমস্যা বা ভয়ঙ্কর অবস্থা দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। দাঁতের সমস্যা কে তুচ্ছ বলে অবহেলা করা যাবে না। দাঁতের সমস্যা অবহেলা করলে তার সারা জীবনের কান্নায় পরিণত হবে। এজন্য প্রথম পর্যায় থেকেই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে কোন রকম সমস্যা দেখা দিলে।