বাঙালির কাছে অতি পরিচিত একটি খাদ্য হলো রুটি। রুটি তৈরি হয় ধান বা গম থেকে। খাদ্যশস্য প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি হয় ময়দা। সেই ময়দা থেকে রুটি তৈরি হয়। আমাদের অনেকের কাছেই রুটি একটি প্রিয় খাদ্য। শখের বসে অথবা প্রয়োজনের তাগিদে আমরা অনেকেই রুটি খেয়ে থাকি। তবে যেভাবেই খাই না কেন তা সবসময় স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। আপনারা জানলে অবাক হবেন রুটি খাওয়ার কিছু উপকারিতা। চলুন জেনে নেই যে দশটি উপকারী তা আপনি পাবেন রুটি খেলে।
১. রুটি হলো শর্করা জাতীয় খাদ্য। শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট দেহে তাপ উৎপাদনে সাহায্য করে। কার্বোহাইড্রেট দেহের শ্বসন প্রক্রিয়ায় প্রভাব রাখে।অর্থাৎ অক্সিজেন গ্রহণ ও কার্বন ডাই অক্সাইড ত্যাগ করার প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে কার্বোহাইড্রেট।আর তাই দেহের স্বাভাবিক শ্বসন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে রুটি খাওয়া জরুরি।
২. যারা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত, তাদের শরীরে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে গ্লুকোজ পরিপাক কারী এনজাইম ইনসুলিন নিঃসৃত হয় না। কৃত্রিমভাবে তাদেরকে ইনসুলিন ইনজেকশন এর মাধ্যমে অথবা ওষুধ হিসেবে গ্রহণ করতে হয়। এমন অবস্থায় রোগী যদি রুটি খায় তাহলে তার শরীরে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এজন্য তাকে কৃত্রিমভাবে ইনসুলিন বা ঔষধ গ্রহন করতে হবে না।
৩. ভাত খেলে শরীরের ওজন বেড়ে যায়। ভাত খাওয়ার পরিবর্তে কেউ যদি রুটি খায় তাহলে তার ক্ষুধা নিবারণ হয় সেই সাথে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। কোন ব্যক্তি যদি একটানা তিন চার মাস সকালে ও রাতে রুটি খায় তাহলে তার শরীরের ওজন অনেকটা কমে যাবে।
৪. গ্রাম অঞ্চলে রুটি একটি সহজলভ্য খাবার। কারণ জাতীয় শস্য ফলানোর জন্য যথেষ্ট জায়গা থাকে গ্রাম অঞ্চলে। তাই খুব সহজেই রুটি তৈরি করা যায়। এছাড়া চাউল এর তুলনায় আটা ময়দার দাম কম। এজন্য মানুষের কাছে সহজলভ্য।
৫. পুষ্টিবিদদের মতে, রুটি খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। যারা উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যায় আক্রান্ত হয়, তাদের জন্য নির্ধারিত খাবার তালিকা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে আর তা হলো নিয়মিত রুটি খাওয়া।
৬. আয়রন ক্যালসিয়াম ফসফরাস ম্যাগনেসিয়াম পটাশিয়াম প্রকৃত উপাদান এর চাহিদা পূরণ করে রুটি। আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রুটি রাখা উচিত।
৭. রুটি খেলে শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে যায়। এছাড়া যারা কোষ্ঠকাঠিন্য সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছেন তাদের উচিত নিয়মিত রুটি খাওয়া। কারণ রুটি খেলে হজম ক্রিয়ার ত্বরান্বিত হয়। খাদ্য হজমে সাহায্য করে রুটি।
৮. গমের আছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম শরীরে প্রবেশ করা মাত্রই 300 রকম উপকারী এনজাইম এর ক্ষরণ বেড়ে যায় ফলে শরীরের রক্ত চলাচল ঠিক থাকে এবং সেইসাথে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৯. রুটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই, নিয়াসিন, জিংক ইত্যাদি উপাদান থাকে। এই সকল উপাদান চোখের ছানি পড়া রোধ করে। এছাড়া অল্প বয়সে রাতকানা হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় রুটি খেলে। রুটি খেলে দৃষ্টিশক্তি উন্নতি হয়।
১০. রুটি একটি হৃদবান্ধব খাদ্য। এটি হালকা খাবার এবং দেহকে চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করে। দেহের ওজন অতিরিক্ত বৃদ্ধি পায় না। শরীর সুস্থ থাকে এবং হৃদপিন্ডের রক্ত চলাচল সহজ ও ছন্দিত গতিতে চলতে থাকে।
এজন্য আমাদের নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রুটি রাখতে হবে।কারণ শুধুমাত্র একদিন রুটি খেলেই এর সুফল পাওয়া যাবে না। ভালো ফল পেতে হলে অবশ্যই নিয়মিত রুটি খেতে হবে। তাহলে বিভিন্ন রোগব্যাধি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হলে আমাদের অবশ্যই নিয়মিত রুটি খেতে হবে।