ঘরে বসে আম ও তেতুলের আচার তৈরি করুন
আমরা বাঙ্গালীরা অনেক খাদ্য রশিক হয়ে থাকি, আমাদের খাবারের তালিকায় আচার অন্যতম আজকে আমরা জানবো ঘরে বসে আম ও তেতুলের আচার তৈরি করার পদ্ধতি ।
আমের আচার তৈরির রেসিপি
আমাদের দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় আচার হলো আমের আচার। আমের আচার অনেক রকমের হয়ে থাকে। আমের আচার অত্যন্ত সুস্বাদু এবং উপকারী। স্থান বিশেষে আমের আচার তৈরির পদ্ধতির ভিন্নতাঃ রয়েছে। আজকে আমরা জেনে নেবো আমের আচার তৈরীর কয়েকটি পদ্ধতি।
আম একটি গ্রীষ্মকালীন ফল। এটি কাঁচা অবস্থায় খেতে সুস্বাদু এবং আচার তৈরির প্রধান উপাদান। আমের আচারের একটি প্রকারভেদ হলো আমসত্ত্ব।
আমরা জেনে নিব আমসত্ত্ব তৈরির রেসিপি।
আমসত্ত্ব তৈরির জন্য সরাসরি কাঁচা আম ব্যবহার না করে কিছুটা পাকা আম ব্যবহার করা হয়। প্রথমে কেটে নিতে হবে কয়েক টুকরো আম। অবশ্যই আমের আঁটি বীজ ফেলে দিতে হবে। এরপর একটি কড়াইয়ে তেল দিয়ে তাতে পাচফোরন, মেথি, লবণ , চিনি দিতে হবে। এরপর টুকরো করা আম গুলো কড়াইয়ে ছেড়ে দিতে হবে। আমগুলো কিছুটা পাকা হাওয়াই, কিছুক্ষণের মধ্যেই আমগুলো গলে যাবে। অতিরিক্ত পানি যোগ করার প্রয়োজন হবে না। কারণ পাকা আম এমনিতেই কিছুটা নরম ।
অনবরত নাড়তে থাকতে হবে। কিছুটা শুকনো মরিচের গুঁড়ো যোগ করতে হবে। শুকনো মরিচের গুঁড়ো যোগ করার পর দেখতে হবে যথেষ্ট ঝাল এবং লবণ ঠিক আছে কিনা।
চিনির পরিবর্তে গুড় ব্যবহার করা যাবে। এরপর ভালোভাবে নেড়ে একটি নরম মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। এরপরে একটি বড় থালায় তা নামিয়ে নিতে হবে। থালার চার দিকে সমান ভাবে আচার ছড়িয়ে দিতে হবে। এবং একটি পাতলা প্রলেপ এর মত তৈরি করতে হবে। এরপর এটি নিয়মিত রোদে শুকাতে হবে। একটানা ১০ থেকে ১৫ দিন রোদে শুকানোর পর এটি মজাদার আমসত্ত্ব তে পরিণত হবে। আমসত্ত্ব মাসের-পর-মাস সংরক্ষণ করা যায়। এটি খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু।
এছাড়া আমের সাধারণ আচার তৈরি করা যায়। এটি তৈরি করা অত্যন্ত সহজ।
প্রথমে কাঁচা আম কয়েক টুকরো করে কেটে নিতে হবে। এরপর ইতি লবণ হলুদ গুঁড়া মরিচের গুঁড়ো সূর্যের তেল কাঁচা মরিচ বাটা চিনি লবণ দিয়ে ভালোভাবে মেখে নিতে হবে। এটি ১০ থেকে ১৫ মিনিট একটি স্থানে আলাদা রেখে দিতে হবে।
এরপর একটি কড়াইয়ে সরিষার তেল দিয়ে তাতে পাচপুরন ,দারুচিনি, এলাচ, তেজপাতা চিনি দিয়ে ভালোভাবে নাড়তে হবে। এরপরে মসলা দিয়ে মেখে রাখা আম কড়াইয়ে দিয়ে দিতে হবে। ১৫ থেকে ২০ মিনিট ভালোভাবে নাড়তে হবে। আম গুলো ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে গেলে এতে পানি যোগ করতে হবে। ঢাকনা দিয়ে ঢেকে কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে। আচ কমিয়ে রাখতে হবে। ১০ মিনিট পর নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন আমের আচার।
কিছু দিন রোদে শুকিয়ে নিলে তা অনেক দিন সংরক্ষণ করা যায়।এবং আমের আচারের চিনির পরিবর্তে গুড় ব্যবহার করা যায়।
তেতুলের আচার তৈরির ঘরোয়া পদ্ধতি
জিভে জল আনা একটি খাবার হলো তেতুলের আচার।করে মেয়েদের কাছে এই খাবারটি খুবই প্রিয়। আমরা অনেকেই জানিনা কিভাবে তেতুলের আচার তৈরি করতে হয়। তবে তেঁতুলের আচার রেসিপি খুবই সহজ।শুধুমাত্র কয়েকটি পদ্ধতি জানা থাকলে যেকেউ বানিয়ে ফেলতে পারবে মজাদার তেতুলের আচার।
এখানে আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে তেতুল খুবই উপকারী। আমাদের রক্ত চলাচল ভালো রাখে এবং উচ্চ রক্তচাপ কমায়। চলুন জেনে নেয়া যাক তেতুলের আচার তৈরির ঘরোয়া সহজ পদ্ধতি।
তেতুলের আচার তৈরীর জন্য যেটি প্রথম লাগবে তা হল পাকা তেতুল। প্রথমে তেতুল খোসা ছাড়িয়ে কিছুদিন রোদে রাখতে হবে। ইতি তেতুল এর ভিতরে কোন জীবাণু বাসা বাধলে তার দূর হয়ে যাবে।
তেতুল ভালোভাবে ভিনেগার দিয়ে মেখে নিতে হবে। ভিনেগার দিয়ে মেখে তেতুল কিছুক্ষণ একটি ঠান্ডা স্থানে রেখে দিতে হবে।
এরপর কড়াইয়ে তেল দিয়ে তাতে পাচফোরন ,তেজপাতা, মেথি , মৌরি দিয়ে ভালোভাবে ভাজতে হবে। ভাজা হয়ে গেলে তাতে হালকা পানি ঢেলে চিনি দিতে হবে। এরপরে ভিনেগার দিয়ে মাখা তেতুল দিয়ে দিতে হবে।
১৫ মিনিট নাড়তে হবে। এরপরে প্রয়োজনমতো পানি যোগ করে ঘনত্ব ঠিক করতে হবে। আচার ঘন হয়ে এলে তাতে শুকনো মরিচ ছেড়ে দিতে হবে। আঁচারের পাত্রে সরিষার তেল ব্যবহার করলে তা সুস্বাদু হয়।
ভুতের তৈরীর কাজ শেষ হলে তা কড়া রোদে শুকাতে হবে। শুকানোর ক্ষেত্রে ভিনেগার যোগ করলে আচার অনেকদিন ভালো থাকে। ৪/৫ দিন রোদে শুকানোর পর কাঁচের তৈরি বয়ামে আচার সংরক্ষণ করতে হবে। কাচের তৈরি পাত্রে আচার সংরক্ষণ করে অনেকদিন ভালো থাকে। এভাবেই ঘরোয়া পদ্ধতিতে অতি সহজে তেতুলের আচার বানানো যায়।