আমাদের জেনে নেওয়া জরুরী দাঁতকে সুস্থ রাখতে কি কি করনীয়।

by Md Limon

আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো দাঁত। দাঁত আমাদের বহিঃকঙ্কাল এর একটি অংশ। মানবদেহের অনুভূতিহীন অংশের মধ্যে অন্যতম হলো দাঁত। তবে তাদের অভ্যন্তরীণ স্নায়ু এবং রক্তশিরা সমূহ অনুভূতিহীন নয়। আমাদের মুখের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো দাঁত। মৌখিক সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে দাঁত প্রধান ভূমিকা পালন করে। দাঁত সুস্থ রাখতে হবে একটি সুন্দর মুখাবয়ব এর জন্য। আমরা অনেকেই দাঁতের সমস্যা কে গুরুত্ব দেইনা। ফলে অনেক রকম জটিলতা দেখা যায় এবং চেহারার সৌন্দর্য নষ্ট হয়।

আমাদের জেনে নেওয়া জরুরী দাঁতকে সুস্থ রাখতে কি কি করনীয়।

প্রথমত দাঁত সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত ব্রাশ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। প্রতিদিন দুইবার সকালে আর রাতে ব্রাশ করতে হবে। আমরা অনেকেই রাতে ব্রাশ করার কথা ভুলে যাই।অলসতা বসন্ত রাতে দাঁত ব্রাশ না করেই ঘুমিয়ে যাই। এতে সারাদিনের জমা খাদ্যকণা দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকে। সারা রাতে নানারকম ক্রিয়া-বিক্রিয়ার এসব জীবাণু পচে যায়। ফলে সৃষ্টি হয় দাঁতের ভাঙ্গন। দীর্ঘদিন এরূপ চলতে থাকলে নানারকম দাঁতের জটিলতা দেখা যায়। অর্থাৎ কোন ভাবেই দাঁতের ফাঁকে খাদ্যকণা জমে থাকতে দেয়া যাবে না।

আরেকটি উপায় হল লেবুর খোসা দিয়ে দাঁত ঘষা। লেবুতে সাইট্রিক এসিড থাকে। এটি সবরকম ব্যাকটেরিয়া জনিত সমস্যা সমাধান করে। লেবুর খোসা কিছুক্ষণ দাঁতে ঘষে নিলে দাঁতের রং উজ্জ্বল হয় এবং সেইসাথে দাঁতের ময়লা পরিষ্কার হয়। ভালো রাখার এটি একটি চমকপ্রদ ঘরোয়া পদ্ধতি।

দাঁত কে সুস্থ রাখার একটি উপায় হলো মিষ্টি জাতীয় খাবার কম খাওয়া। ছোটদের প্রায় সবাই চকলেট এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে ভালোবাসে । এবং ছোটদের মধ্যে ব্রাশ করার প্রবণতা কম।এতে তাদের দাঁত বেশিরভাগ সময়ই ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়। দাঁতের রোগ সৃষ্টি হয়। দাঁতে ব্যথা মাড়ি ফুলে যাওয়া সহ আরো অনেক রকম খারাপ অবস্থার সৃষ্টি হয়। বাচ্চাদের কেক চকলেট জাতীয় খাবার থেকে দূরে রাখতে হবে।
খেয়াল রাখতে হবে যেন বাচ্চাদের দাঁত তোলা দেরি না হয়। দেরি করে দাঁত তুললে অনেক সময় দাঁত আঁকাবাঁকা হয়। এবং পরবর্তীতে তা ঠিক করা কঠিন হয়ে পড়ে।

প্রচুর পরিমাণে ছোলা, ডাল, এবং বীজ জাতীয় খাবার খাওয়া দাঁতকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। কারণ এসব খাবার আমাদের শক্তি বাড়ায়। সেইসাথে দাঁত মজবুত হয়।
প্রতিবার খাবার গ্রহণের পরে ভাল ভাবে আঙুলের সাহায্যে দাঁত পরিষ্কার করতে হবে।
যদি দাঁতের গোড়ায় ব্যথা হয়, তাহলে কুসুম গরম পানিতে লবণ দিয়ে তার মুখে নিয়ে কিছুক্ষণ রাখতে হবে। এতে ব্যথার উপশম হয়।
বর্তমানে দাঁতের বিভিন্ন শল্যচিকিৎসা বের হয়েছে। এসকল চিকিৎসার মাধ্যমে আঁকাবাঁকা দাঁত সোজা করা যায়। এছাড়াও হলদে রঙের দাগ সাদা ধবধবে দাঁতের পরিণত করা যায়।

তাতেও সমস্যা তেমন গুরুতর পর্যায়ে না যায় তাহলে ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে।
দাঁতের জন্য সবচেয়ে উপকারী প্রাকৃতিক উপাদান হলো নিমের ডাল। নিমের ডাল প্রাকৃতিক গুণসম্পন্ন এবং কোন রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।নিয়মিত নিমের ডাল দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করলে দাঁত মজবুত ও সাদা থাকে।এছাড়া দাঁতকে সুস্থ রাখতে হলে আমাদের সব রকম বিপদজনক কাজ এড়িয়ে চলতে হবে। অনেক সময় বড় ধরনের আঘাত জনিত কারণে দাঁত ভেঙ্গে যায়। ভঙ্গুর দাঁত পরবর্তীতে স্থায়ী ব্যথা ও সমস্যার সৃষ্টি করে। এজন্য আমাদের সাবধান থাকতে হবে।

দাঁত দিয়ে অতিরিক্ত শক্ত খাবার খাওয়া যাবেনা। অতিরিক্ত শক্ত খাবার খেলে দাঁতের গোড়া নরে যায় এবং দাঁত পড়ে যেতে পারে।
দাঁতের কোনরকম অপারেশন করা হলে সেই দাঁত দিয়ে সবসময় নরম খাবার খেতে হবে। এবং দাঁতের ক্ষতি হয় এমন কোন খাবার খাওয়া যাবেনা।
দাঁত একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ বিধায় এটির যত্নে আমাদেরকে সব সময় সচেতন থাকতে হবে।
দেখ কোন কারনে ভেঙ্গে গেলে বাকি ভাঙা অংশে বেশিরভাগ সময় খাদ্য আটকে যায়। আটকে থাকা খাবার দাঁতে ব্যথার সৃষ্টি করে। এজন্য কোনো কারণে দাঁত ভেঙে গেলে আমাদের উচিত বাকি ভাঙা অংশটি তুলে ফেলা।এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওই স্থানে একটি নকল দাঁত বসানো ব্যবস্থা করতে হবে।
বর্তমানে নিখুঁতভাবে দাঁতের সার্জারি করার প্রযুক্তি বের হয়েছে।

সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করার জন্য দাঁতকে সুস্থ রাখতে হবে। এক্ষেত্রে সবার আগে নিজেদের সচেতন হতে হবে। কোনরূপ দাঁতের সমস্যা কে অবহেলা করা যাবে না। সব সময় দাঁত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। নিয়মিত ব্রাশ ও কুলকুচি করতে হবে। এক্ষেত্রে মাউথওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে।
অর্থাৎ সব দিক দিয়ে নিজের ও নিজের সন্তানকে সচেতন করতে হবে। কোন সমস্যা তুচ্ছ বলে ফেলে রাখা যাবে
না। সেই সাথে কোন রকম সমস্যা গুরুতর পর্যায়ে গেলে ঘরোয়া পদ্ধতি উপর নির্ভর না করে সরাসরি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

You may also like

Leave a Comment