আপেল খাওয়ার কিছু উপকারিতা ও আপেল খাওয়ার কিছু অপকারিতা
আপেল আমাদের সবার কাছে একটি অতি পরিচিত ফল। আপেল খাওয়ার কিছু উপকারিতা ও আপেল খাওয়ার কিছু অপকারিতা আছে, যুগ আগে আপেল কোনো একটি নির্দিষ্ট মৌসুম ছাড়া পাওয়া যেত না। কিন্তু বর্তমানে আপেল কোনো মৌসুমী ফল নয়, কারণ এটি সারা বছরই পাওয়া যায়। আপেল অনেকেরই পছন্দের ফল, আবার অনেকেই আপেল পছন্দ করেন না। আপেল খাওয়ার অনেক রকম উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে, যা আমাদের সকলেরই জানা দরকার।
এবার জেনে নিব আপেল খাওয়ার কিছু উপকারিতা
আপেল খেলে শরীরের বিপাক ক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পাদিত হয়।আপেলে ভিটামিন সি থাকে যা আমাদের শরীরের ইমিউনিটি বৃদ্ধি করে এবং এই করোনা কালীন সময়ে আমাদের অবশ্যই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আপেলের রস কোন বৃদ্ধ ও অসুস্থ মানুষকে খাওয়ালে তার শরীরে এমন এক ধরনের এন্টিবডি তৈরি হয় তৎকালীন রোগ সারাতে সাহায্য করে। অ্যাপেল আমাদের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। অ্যাপেলের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন আমাদের স্মৃতি শক্তি এবং বুদ্ধি ধারণ ক্ষমতা বাড়ায়। ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে আপেল এর জুড়ি নেই। আপেল খেলে ত্বক ফর্সা চকচকে এবং মসৃণ হয়। আমরা অনেকেই ব্রণ জনিত সমস্যায় ভুগি। এ ধরনের সমস্যার প্রতিকার একমাত্র আপেলই করতে পারে।
আমাদের প্রত্যেকের উচিত প্রতিদিন অন্তত একটি করে আপেল খাওয়া। চুল পড়া সমস্যার সমাধান করতে আপেল সাহায্য করে। আপেলের খোসার ঠিক নিচের অংশে বেশি পরিমাণ ভিটামিন নিহিত।
আমরা অনেকেই আপেলের খোসা ফেলে দিয়ে আপেল খাই। কিন্তু এটা মোটেও উচিত নয়। আপেলের খোসার প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন উপস্থিতি এবং এটি পুষ্টির আধার। শুধুমাত্র আপেলের সাদা অংশে যে পরিমাণ পুষ্টি থাকে তার চেয়ে অনেকগুণ বেশি উপকারী হলো আপেলের খোসা। এজন্য আপেল খাওয়ার সময় খোসা ফেলে না দিয়ে পুরোটা খেতে হবে।
একটি বড় আপেলের ফাইবার আপনাকে প্রচুর উপকারে সাথে সরবরাহ করে।এক গবেষণায় দেখা গেছে অন্ত্র স্বাস্থ্য পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশ পাওয়া অন্ত্রের গতি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং নিয়মিত রাখে আপেল। এর আরো কিছু প্রমাণ রয়েছে যে ফাইবার আপনাকে কোন ক্যান্সার থেকে রক্ষা করবে। এছাড়া হৃদরোগের সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করে আপেল।
এবার জেনে নিব আপেল খাওয়ার কিছু অপকারিতা
প্রতিদিন আপেল খাওয়ার জন্য কয়েকটি পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হয়। যদি ফাইবার খাওয়ায় অভ্যস্ত না থাকা যায় এবং হঠাৎ করে প্রতিদিন আপেল খাওয়ার অভ্যাস করা যায় তাহলে অস্বস্তিকর গ্যাস এবং পেট ফোলা ভাব অনুভূত হতে পারে। ডায়েটে ধীরে ধীরে আপেল এবং অন্যান্য খাবারগুলি থেকে একটি ফাইবার যুক্ত করতে হবে এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এটি পর্যায়ক্রমে করতে হবে। হজমক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য প্রচুর পরিমাণে জল পান করতে হবে। কিছু লোক আপেল এবং সম্পর্কিত ফলের সাথে এলার্জির সম্মুখীন হয়। যদি এলার্জি থাকে তবে এপ্রিল থেকে দূরে থাকা উচিত।এমনকি আপেলে যে এলার্জি থাকে তা স্কিন ক্যান্সার পর্যন্ত সৃষ্টি করে।
তাই যাদের এলার্জি জাতীয় সমস্যা আছে তাদের উচিত হঠাৎ মাঝে মাঝে আপেল খাওয়া। অর্থাৎ তাদের জন্য আপেল নিয়মিত খাওয়া উপযুক্ত নয়। এছাড়া আপেলের বীজ আমাদের জন্য ক্ষতিকর।বীজ খেয়ে ফেলেন তাহলে তার মৃত্যু অনিবার্য। কারণ আপেলের বীজ এর এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ লক্ষ করা গেছে যা ধীরে ধীরে মানুষের শত্রুকে আক্রমণ করে এবং মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। এছাড়া অতিরিক্ত আপেল খাওয়া মানুষের ওজন বৃদ্ধির কারণ। ওজন বৃদ্ধি পেলে হাত পায়ে ব্যথা কোমরে ব্যথা এবং সেইসাথে ডায়াবেটিস জাতীয় সমস্যার ঝুঁকি থাকে।
তাই অতিরিক্ত আপেল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। আপেলে যে পোকা হয় তা আমাদের ক্ষতি করে। এ সম্পর্কে আমরা খুব বেশি অবগত নই কারণ আপেল আমাদের দেশে সেভাবে চাষ হয় না। আপেল মূলত বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। আপেল গাছের যে পোকা হয়, তার কামড়ে মানুষের শরীরের ক্ষত সৃষ্টি হয়।
এছাড়া যাদের গ্যাস্ট্রিক জনিত সমস্যা আছে তাদের আপেল খাওয়ার পর বমি বমি ভাব মাথা ঘোরা গলায় টক ভাব বুকে জ্বালা সহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
এজন্য যে খাবার ই আমরা খাই না কেন তার পরিমাণ হতে হবে অবশ্যই সীমিত।পরিমিত খাবার খেয়ে নিন কেবলমাত্র সুস্থ দেহে সুন্দর মন পাওয়া সম্ভব। কারণ অতিরিক্ত সবকিছুই আমাদের জন্য ক্ষতিকর। আপেল ও ঠিক তেমন একটি ফল যা ভিটামিন এ পরিপূর্ণ হলেও অতিরিক্ত আপেল খাওয়া আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।